যে রাজনীতি রাতের আঁধার প্রসারিত করে,
উদ্যত হয় ভোরের সুযোদয় রুখতে,
আমি সে রাজনীতি ঘৃনা করি ।
যে রাজনীতি মানুষকে হিংস্র বন্য করে,
মানুষ আর অমানুষের পাথক্য দেখায় না ,
আমি সে রাজনীতি ঘৃনা করি ।
যে রাজনীতিতে হায়েনা আর হিংস্রের দৌরাত্ম ,
সমুদ্রের হাঙররা উঠে আসে ডাঙায়,
আমি সে রাজনীতি ঘৃনা করি।
যে রাজনীতিতে দেখা যায় পিতার কাঁধে পুত্রের পাহাড়সম লাশ,
মায়ের সামনে ধষিতা বোনের আত্মাহুতি,
আমি সে রাজনীতি ঘৃণা করি।
যে রাজনীতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্ররা
লাশ হয়ে বাড়ী ফিরে,
কিংবা রিমান্ডের নামে পাশবিক নিযাতনে মৃত্যুর প্রহর গোনে
কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে,
আমি সে রাজনীতি ঘৃনা করি।
যে রাজনীতি শ্রমিকের ন্যায্য মজুরী চাওয়ার অপরাধে
আপনজনের হাতে তুলে দেয় লাশ,
ফুলবানু আর মতিবালারা ক্ষুধার জ্বালায় বেছে নেয়
টানবাজার কিংবা রাতের অন্ধকার কোন গলিপথ,
আমি সে রাজনীতি ঘৃনা করি।
যে রাজনীতি আমার পিতা পিতামহের নাম মুছে দেয়,
আমাকে জারজ উপাধিতে ভূষিত করে,
আমি সে রাজনীতি ঘৃনা করি।


দাঁড়াও হে রাজনীতিবিদ।
বিবেকের বোতামগুলো খুলো।
তাকাও জঙ্গলের হিংস্র প্রাণীর দিকে।
নিজেকে প্রশ্ন করো।  
তোমার আর হিংস্র প্রাণীর পাথক্য জেনে নাও।
তাকাও বিশ্ববিদ্যালয় ফেরত মেধাবী ছাত্রের লাশের দিকে।
নিজেকে প্রশ্ন করো। সে তোমার সন্তান হলে কি করতে?
ফুলবানু কিংবা মতিবালারা তোমার বোন
কিংবা আপনজন হলে কি করতে ?
তাকাও তিরিশ লাখ শিল্পীর আঁকা মানচিত্রের দিকে।
দেখো আগ্রাসীদের নখের আঁচড়ে ক্ষত বিক্ষত মানচিত্র।
নিজেকে প্রশ্ন করো।
তোমার অস্তিত্বের অবশিষ্টতার উত্তর জেনে নাও।


জানি। কোন প্রশ্নের উত্তর তোমার জানা নেই।
এবার তাকাও আকাশের দিকে, দেখো উদারতা।
বৃক্ষের দিকে তাকাও, দেখো সমান্তরাল ছায়াদান।
হাস্নাহেনা গোলাপের দিকে তাকাও,
দেখো কিভাবে অকাতরে সুগন্ধি বিলিয়ে ঝরে পড়ে মাটিতে।


আর তুমি...???
তোমার আর কত ক্ষমতার দম্ভ, অহংকার চাই ?
তোমার আর কতটি সুউচ্চ অট্টালিকা চাই ?
সুরম্য প্রাসাদে আনমনে আর কতকাল নিদ্রা যাবে?
তুমি এক অনন্তের যাত্রী।
যেপথের হাতছানিতে সবকিছু ছেড়ে চলে যাবে,
মিশে যাবে ধরণীর ধূলিকণায়।
তাই ফিরে এসো মানুষের পথে, সত্যের পথে।
ভালবাস তোমার দেশকে, দেশের মানুষকে।
মানুষের মাঝে খোঁজো তোমার স্রষ্টাকে
আর অনুভব করো স্বগীয় প্রশান্তি।