চলে গেছে সাথী
মোঃ সালাহ্ উদ্দিন
---------------------------------------
কালিয়াকইরের সোলা প্রতিমা, গোয়াল বাথান গ্রাম,
শ্যামলা বর্ণের দুটি মেয়ে, সীমা সাথী নাম।
সীমা ছিল নাইনে তখন, সাথী ক্লাস ফোরে,
একই সাথে পড়তে যেত প্রতিদিনই ভোরে।
শিমা ছিল লাজুক লাজুক, সাথি অনেক চালু,
ওদের বাপকে ডাকত সবাই চাচা, কাকা, খালু।
গরু নিয়ে আসতো চাচা, মোদের ক্যাম্পের পাশে,
সকাল বিকাল গোঁ চড়াত সবুজ তাজা ঘাসে।
সাথী আসত বাবার সাথে, সেথায় মাঝে মাঝে,
বাবাকে সে হেল্প করিত, টুকি টাকি কাজে।
মোদের পানে দেখত চেয়ে, ফিরে ফিরে খুকী,
মিষ্টি মিষ্টি হাসত শুধু হলে  চোখা চুখি।
কাছে ডেকে কইতাম কথা কভু সুযোগ পেলে,
মনে মনে ভয় থাকিত কেউ না দেখে ফেলে।
নানা বাড়ি যাবে সাথী মামা আসছে নিতে,
লম্বা সময় থাকবে সেথা বেড়াবে এই শীতে।
নানা বাড়ি অনেক মজা, নানি খাওয়ায় পিঠা,
শিরণি, পায়েস, খৈ-মুড়ি ও খেজুর রসের মিঠা।
সীমা আপু পরে যাবে, পড়ার চাপ তার বেশি,
গল্পে গল্পে বলতো সাথি, মিষ্টি হাসি  হাসি।
বাপে তারে আদর করে, মায়ে শুধু বকে,
হরেক কাজের ফরমাস করে, সারা বেলা তাকে।
আপু শুধু সারা বেলা পড়ে, শুধু পড়ে,
পড়ার সময় যেতে দেয় না আপু তারে ঘরে।
এ ধরনের অনেক নালিশ সাথীর কোমল মনে,
তাহার কথা শুনতাম ডেকে, মোরা কয়েক জনে।
ক’দিন পরে চলে আসি, সেখান থেকে ফিরে,
তার খবর আর হয়নি রাখা অনেক কাজের ভিড়ে।
হঠাত একদিন খবর পেলাম, সাথীর অনেক জর,
সময় করে দেখতে গেলাম সেথায় ক’দিন পর।
গিয়ে দেখি সাথীর মায়ে কাঁদছে বিলাপ করে,
সাথীরে তুই আমায় ছেড়ে গেলি কেমন করে।
সাথীর বাপকে বললাম, চাচা কি হইছিল ওর?
কেঁদে কেঁদে বলল চাচা, হইছাল ডেংগু জর।
ইশারাতে মেয়ের কবর দেখায় চাচা দূরে,
সেথায় গিয়ে দেখে এলাম, একটু খানি ঘুরে।
ফিরে আসি একটু পরে বিসন্নতা নিয়ে,
ভুলতে বেস্ত হই সাথীরে, কর্ম তৎপর দিয়ে।
অনেক কথা আজও সাথী হৃদয় মাঝে বলে,
মনে হয় না সত্যি সাথী ছেড়ে গেছে চলে।।