মাধবীলতা, অনেক কথা
কব, তোমার কাছে
নিরবে ক্লান্ত দুপুরে
দিঘীর পাড়ে বসে
যে কথার নির্যাস জমে আছে।
অধবেলা, বন্ধ খেলা
মনের কারাগারে ঠাসাঠাসি
যে কথার অনেক ব্যাথা
পোড়ে বারোমাসি।
যে কথার বয়স বেড়েছে
কোমর হয়েছে কুঁজো
যে কথার চুল পেকেছে
চক্ষু বুজো বুজো।
যাতে পড়েছে ধুলোর ছাপ
ওষ্ঠে ঢেলে ছাড়বে হাফ
উদার মনে ধরলে মেলে
কেড়ে নেয় পাজি চিলে
শুভ্র বাক্সের বাঁধন খুলে
মিশে যায় দূরের নীলে
জলের আয়নায় দেখতে গেলে
যদি তখনও যাই ভুলে।
যার নাহি আপন ঘর
নাহি চিহ্ন, আছে ভার
নাহি ব্যাপ্তি কেবল সার।


কখন, কোথায় সন্ধ্যা প্রাতে?
ঝর্নার ধারে ফুল হাতে
শুনবে কি উরু লাজে
যখন তোমার নুপুর বাজে।
চরণ বাড়াও ধীরে ধীরে
ভূতল ডোবে মেঘের পরে।
তাই কি করবে ধার্য
কব তখন ভাবলে ন্যায্য
প্রদীপ জ্বালায় ভাস্বর চাঁদ
তখনই কি শোনার সাধ?
সার্থক হবে গভীর রাত
না করলে তুমি অবমত।
না রবে দিনের কোলাহল
না বহিবে বায়ু চঞ্চল
না থাকিবে পাতার কাঁপন
পাখির ডাক আকাশ ব্যাপন
নিন্দুকেরা ঘুমে রবে কাতর
থাবেনা চাপা বুকে পাথর।


বদনে বহিবে মাধুরী লজ্জা
তারায় তারায় আলোক সজ্জা
শুনে অশ্রুমতি হবে চতুর্দশী
নীলে নীল চক্ষু আকাশী
কপালে বহিবে ফোঁটা ফোটা ঘাম
নাচিবে গাহিবে থেমে থাকা শ্যাম।
সাত বসন্তের ঘুচবে ব্যাবধান
মিথ্যে অভিমানের হবে অবসান
বুলবুলি সুর ঢালিবে
উঠবে জেগে ধরা
পদ্ম ফুলে বর্ষা ছোবে
ভাঙবে মনের জরা।


প্রকাশবীণে মন করে আনচান
বেরোয় বেরোয় আধামরা প্রাণ
সেই কথা কব আজি
গুমরে মরে উৎসুক সাজি
বল রাজি কি অরাজি।
সেই কথা কব আজি।
কব কথা সেই কথা
যা চোখের পাতায় পুড়ত
বলি শোন সেই কথা
যা ঘূর্ণি ঝড়ে উড়ত।


যৌবনিকের হৃদয় আজও স্বপ্নে ভরা
আঠারোর মত এখনও বাঁধন হারা।