সবুজ প্রান্তর বানায় ওরা লাল বর্ণের দুর্গ
প্রকাণ্ড স্নায়ুকতা ক্ষীণ নিঃশ্বাসে ছেয়ে দেয় মর্গ
লেলিহান অশ্রুতে ধৈর্যের বাঁধ বেধে
গোর খুড়ি নিজ হাতে
অবশেষে দিবস করমে, মরনের কালো খামে
দামাল ছেলের জোড়া হাড় আসে মোর পাতে।


ভোরে ফোটা মুমুরশ ফুল কলি
রক্ত করবীর, খড়গ তলে মুণ্ড
বাচতে চাই, না হয় হোক অসৎ দণ্ড
বুক খুলে জাগো ওরে, বিষে নীল সাগর তীরে
উকি দিয়ে টোনের সুরে, মিছিলে ঘিরে।


রাতের অন্ধকারে বাঁশ বাগানের ধারে
ঝড় ওঠে হুমড়ি খেয়ে মরার
কলকাকলিতে যে যায় আশা নেই ফেরার
নিশিথ ভোরে কাঁদে মা মুষল ধার ঘন নয়নে
পুত্র শোকে ছায়াছন্ন গভীর প্রহরে ব্যাথাতুরা
অবিশ্রান্ত উন্মাদে মায়ার লাশ কাঁদে রাত্রি ভরা।


পল্লী বধূ কেদেছে বহুবার
শ্রাবণ মেঘের ন্যায় ডুকরে সাবাড়
খোলা চুলে আঁচল ছিরে, আনমনে ঘোরেফিরে
অপমান বুকে দহে, ভরা নদী চোখে বহে
স্মৃতির জানালায় মরণের অপেক্ষা মাত্র
বধূ হারিয়েছে বল চোখ টলমল
আসেনিকো ফিরে সাধের সাধনার পাত্র।


শিশুর মমতার বাহুবন্ধন ছেড়ে
উল্কার ইশারায় ছেয়ে দেয় আঁধার
বেদনা বীণের সুরে, বিবর্ণ পালক মুখ ছেয়ে পড়ে
নিমিষে রাঙ্গা আভা নিষ্প্রভে ঝরে
প্রতিবাদ, বিদ্রোহ আর মুক্তি
ক্লান্ত ঘুমে স্বপ্ন ঘোরে, আঁকত সাদা কালো ছবি
নরম গালে চুমু খেয়ে উঠত ভোরের রবি।


বাবা তোমার ছোট খোকনের কথায় ভাবি
বাবা বলে আর তোমায় ডাকে না কেহ
ওই যে খোকন ঘুমিয়ে আছে নিথর তার দেহ
ধৈর্য ধর বঙ্গমাতা ধৈর্য ধর
যে খোকন হারিয়ে গেছে, সে পূর্ণ হয়ে এল।


শতছিন্ন জামা বুকে আঁকড়ে হতবিম্ব বেদনা
সবুজ খামে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে, নতুন ঠিকানা
নিত্য সেজে, আঁধার ঢেলে ডাকে
দাউ দাউ আগুন ওঠে বেয়ে
কুমারীর গাড় আলতার ফাকে।


নগর মাঝে বেদম বাজে চমকিত উজাড় বেনু
ঘুমন্ত ডাক পায়রা ওড়ে সুপ্ত ক্লান্ত ঝেড়ে
স্তব্দ নীড় ছলনার অন্তরালে, স্বপ্ন ঝরে নিঃসাড়ে
বেয়নেট পদঘাতে নুয়ে পড়ে লাল টুকটুকে রেণু
দুঃসময়ে বারংবার মোকাবেলা, বিরঙ্গনা যুদ্ধ করে মেহেদী হাতে
বহমান ঝড় রাতে, নত মস্তকে ঢলেনি কোনমতে।


অতৃপ্ত আত্না উত্তাল করতে শিকার ভেদী
পাথর শোকে আসেনি চোখে জল, নিমন্ত্রনহারা বাদী
কৃষ্ণচূড়া ফুলে মাঠ ভোরে
দাড়িয়ে মত্তলিলা দেখেছি সোনা পথের ধারে
মাতাল মহুয়ার সবুজ মাটির তলে
আজ অভিশাপ মুক্ত গঞ্জনার মালা খুলে।


রাঙ্গা দিদিরে বল ভাই
দিগন্ত উন্মোচিত মাতাকে
নতুন শাখায় ফুটছে ফুল
প্রাণ স্পর্শী কবর ঝাঁকে।