আজ ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিন। কাল থেকে আরম্ভ হবে মার্চ মাস। স্বাধীনতার এ মাস উপলক্ষে আমি আমার নতুন গদ্যকবিতা প্রকাশ করছি।


ক’দিন ধরেই হাত দুটো নিশপিশ করছে
একটা ছবি আঁকার জন্য,
কিন্তু কি আঁকব না আঁকব,
ভেবেই তো পাচ্ছি না।
আমার কালার প্যালেটে সব রং ফুরিয়ে গেছে।
আছে মাত্র দুটো রং।
গাঢ় সবুজ আর রক্ত লাল।
দুটো রং দিয়ে কি আর ছবি হয়?
হঠাৎ কে যেন আমায় কানে কানে বলল,
হবে না কেন?


ইজিচেয়ারের আধশোয়া অবস্থা থেকে উঠে পড়লাম আমি,
সোজা গেলাম বোর্ডে টানানো ক্যানভাসের কাছে।
সাদা ক্যানভাস রাঙিয়ে দিলাম উজ্জ্বল সবুজে।
তার ঠিক মাঝখানে, এঁকে দিলাম এক লাল টুকটুকে বৃত্ত।
যেন সবুজ আকাশে লাল সূর্য।
তারপর তা নিয়ে গেলাম দর্শনার্থীদের কাছে।


তারা তো হেসেই খুন।
বলল, “কি এঁকেছ এটা? এ তো মামুলি এক পতাকা!”


মামুলি?
আমার মাতৃভূতির স্বাধীনতার ঝান্ডাকে ওরা মামুলি বলল?
আমার দেশের তারুণ্যের প্রতীককে ওরা মামুলি বলল?
ওদের সাধারণ চোখ কি করে বুঝবে আমার শিল্পকর্মের মহত্ত্ব?
ওরা তো বোঝেনি, ঐ পতাকার মাঝেই আমি এঁকেছি চিত্র।
সবুজ ক্যানভাস দিয়ে বুঝিয়েছি সবুজ মাঠ,
তারুণ্যের ভান্ডার, অফুরন্ত শক্তির সম্ভার।
ঐ সবুজ মাঠেই তো সকল মুক্তিযোদ্ধার রক্তের রং লেগে আছে,
সেই রক্তের রং তো লালই হবে।
কেউ দিয়েছে বিন্দু বিন্দু, কেউ অজস্র।
সেই সমস্ত রক্ত জড়ো হয়েছে এক জায়গায়।
মাঠের ঠিক মাঝখানে তৈরী করেছে স্বাধীনতার লাল সূর্য।


কিন্তু হায়,
দর্শনার্থীরা এ কথা কি করে বুঝবে?
তাদের চোখ যে পিকাসোর গুয়ের্নিকা দেখেই অভ্যস্ত।