অলস সময়ধারা বেয়ে
পার হয়ে পতিসর থেকে শিলাইদহের
গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ
আমরা পৌছে গিয়েছি তোমার সাজাদপুরের
ভাঙা পথের রাঙা ধুলায়
কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন ছড়িয়ে দিয়ে।


কবিগুরু,
এখানেই যদি শেষ হত, ঠিকই ছিল।
কিন্তু এখন পূর্ব দিগন্তেই প্রদোষকাল, ঝঞ্ঝাবাতাসে রুদ্ধশ্বাস
দয়াহীন সংসারের গোপন হিংসা কপট রাত্রিচ্ছায়ে
রক্তে অশ্রুতে মিশে পঙ্কিল ধূলির উপর
বীভৎস কাদার পিণ্ডে দস্যু-পায়ের কাঁটা-মারা জুতোর ছাপ


কোথাও ধর্মের নামে অবারিত হানাহানি
কোথাও তস্করের দল রাজার প্রশ্রয়ে
লুটে নিতে গরীবের ধন
মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে
সাভারের ধ্বংসস্তুপে মরেছে তোমার মুসলমানীর মেয়ে
ঘরে বাইরে বিসর্জন-এর ঢাক,
কেবলই রক্তের স্রোত
হানাহানি-হত্যা-আত্মহত্যা-আত্মঘাতী হামলা
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছে আকীর্ণ করি।


‘এত রক্ত কেন’ বলার শিশুটিও কোথাও
নির্জনে ঘুমিয়ে পড়েছে।


রবীন্দ্রনাথ, তুমি শোন
তোমার গোরা, লাবণ্য, আব্দুল মাঝি, নিখিলেশ, চামারু সবাই…
সবাই চলছে আজ মৃত্যুর মিছিলে।  


বৈশাখ, ২০১৩