সেই কবে থেকে হাঁটছি তো হাঁটছিই।
#
সকালের সোনা রোদ গড়াতে গড়াতে
তপ্ত তাওয়া ছুঁয়ে গোধুলীর আলোর স্নানে
চলে গেছে পশ্চিমের ঢালে।
আমরা তখনও হেঁটেই চলেছি, হেঁটেই…
#
হাঁটছি কবে থেকে, ঠিক মনে নেই
শুধু মনে আছে, সবে তখন মাটি চষে বীজ বুনে
ফসল তুলতে শিখেছি। তারপর তুলো পাকিয়ে
সুতো বানিয়ে কাপড় বোনা… লোহা গলিয়ে
হাতা-খুনতি থেকে তলোয়ার, বন্দুক।
আর তখন থেকেই জীবনের অন্য নাম
হয়েছে যুদ্ধ। একদিন যাকে সংগ্রাম বলতাম।
#
এমনই এক সন্ধ্যায় সোনালী জঙ্গল
আর নীল গমক্ষেত পার হয়ে আমি
তাঁকে জড়িয়ে ধরেছিলাম প্রচণ্ড আবেগে–
অন্যরকম সেই পাওয়ার আনন্দ আর বেদনা
আজও ঠিক বোঝাতে পারবো না।
তারপর তো আমাদের উত্তরসুরীরা এল…
#
নীল গমক্ষেত রুক্ষ হল... চড়াইদের খেলা
সোনালী জঙ্গলে একদিনে পাঁচিল উঠল
আর জঙ্গলের আড়ে বন্দুকের গর্জন
কিছু মরল, কিছু বাঁচল আর কেউ কেউ
ফুলে ফেঁপে লাল হয়ে টাকার কুমীর...
#
আমাদের পায়ের তলায় ছাল-ওঠা মেঠো পথ
আমাদের ডাইনে জঙ্গল, বাঁয়ে উদ্যত সঙ্গীন
আমাদের ক্ষেত রুক্ষ, নদীতে বাঁধ
আমাদের জল নেই, জমি নেই, কারখানা নেই
ঝড়-জল-রোদ-বৃষ্টি নেই, ঘর সংসার নেই
আমরা শুধু হেঁটেই চলেছি –
নেভাদা থেকে কানাডা
সিরিয়া থেকে গ্রিস,
কুমিল্লা থেকে বাদকুল্লা
বন থেকে বার্লিন,
প্রাগ থেকে হেগ
#
তবু আজও আমাদের বাদামপাহাড় ছোঁয়া হয়নি
আজও পারিনি বৃত্ত ভেঙ্গে ছায়াপথ গড়ে নিতে।
পথ, তুমি অন্তত থেকো শেষ তক।
আর আগুন!
তোমার দহনে শুদ্ধ করে নেব জীবনের পথচলা


06/10/2015