পঞ্চম০১


আষাঢ়ে জোছনা


আষাঢ়ে জোছনা,
সোদা মাটির গন্ধে ভেসে উঠে
দুপুর রাতে! রাত নিঝুম, ঝম ঝম
থেমে থেমে ঝির ঝির বৃষ্টি ঝরা রাত।


জোছনার গহিন অঙ্গ যানান দেয়
কাদা জলের চিক চিকে রহস্য;
পথিক পথে পা রাখতে
কাদায় ডুবে যায় আচানক দৌনতায় বেবস!
জোনাক জোনাকিরা আগেই বেবস হয়ে
ঘাসের আঁড়ালে ঝিমিয়ে রয় জলকাদা মেখে।
লাউ মাচায় জোছনার লুকোচুরি
ঝিলমিলিয়ে বৃষ্টির মৌনতা বিলায়।


বাঁশ ঝাড়ে,
বাদল রাতের মৌনতা ভাঙ্গে ঝড়ো বাতাস
পাতার ফাঁকে জোছনার লুকোচুড়িরতে
বাঁশঝাড় যেন ভুতুরে আস্তানা সাজে।
জোছনা আলোয় ভেসে উঠে
একঝাঁক সাদা বক নির্জিব ভিজে ভিজে
জোছনার আলো গায়ে মাখে।
======


যেন সবুজ সুরম্য নগর


যেন সবুজ সুরম্য নগর
বর্ষার জলে ভিজে সিক্ত, সুরম্য ফুটপাতের ইটের ফাটলে
বেশ সবুজাভা আগাছার দৌরাত্য।
শুষ্ক বালির গহনে
বীজের দৌরাত্য সোদা ফুটবার, তাইতো জলের সিক্ততায়
অঙ্কুরোদগম বীজের মৌনতার মিছিল।
দুর্বোধ্য পাচিলের ফাটলে,
কবে কোন বীজ?  পাখির ঠোঁটে গরিয়ে ছিল নিমিত্তে
তাই আজ পাচিলের গা জুড়ে সবুজ অঙ্গন।


ঘাসের আঁড়ালে লুকিয়ে ছিল
যে লজ্জাবতী লতা, তা বেশ উদ্যান গহনায় সাজে
ফুটপাতের কাঠ বাদামের শিকড় জুড়ে।
=====


পথিক ভ্রম


পথের বাঁকে,
আজ কোন পথে?
পথিক চলতে পথে ক্লান্ত! বর্ষার জলে ভিজে
পথ ডুবেছে ভেসে গেছে জনারন্য
সুবোধ ফসল ভেসে গেছে; আঙিনা ডুবে
সজনে গাছটায় গড়ায় জল পচন ধরে
মরে ভেসে যায় বানের জলে।


তাই পথিক ভ্রমে ভাসে
পথের দিশায় নন্দন ধ্রুবতারায় আশায়
চেয়ে চেয়ে পথের নিশানা খুঁজে ফিরে।
আর কত পথ? দিতে হবে পারি
আদি অন্ত পথিক না জানে!
=====


জলজ আঁধারে


বর্ষার বাদলে ক্ষণজন্মা চাঁদ
ভেসে উঠল আজ আকাশ ভরা মেঘের
জলজ আঁধার ঠেলে;
যেন তোমার সেই জলছবি! কত বার!
বার বার হারিয়েছে জলের মিহি ঢেউয়ে
পালিয়েছে সিক্ততায় কেঁপে কেঁপে
যদি পাছে হারিয়ে যায় সব!


কিন্ত এই যে বিরহী আষাঢ়ে, জোছনা দ্যাখো!
ঠিক তোমার উল্টো!
যতই জড়াও না মনের ভাঁজে
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় লাজে; পালিয়ে যায় না মোটে
ভাব না একবার তারে সই করে মনে,
বুঝবে, তখন যাতনা আমার
সবটুকু যায় ভেসে জলজ আঁধারে।
=========


কৈশর বিহঙ্গ


কৈশর বিহঙ্গে,
কতই না যাতনা আমার সয়েছো মা?
জলে ডুবে ডুবে ভেসে ভেসে
তোমার কথা ভুলে! কৈশর সখ্য লয়ে।


পারিনি তখন বুঝিতে
কত যাতনা দিয়েছি তোমায়?
শক্ত হাতে ধরেছ হাত, গামছায় মুছায়ে মাথা
পাছে বাছার অসুখ করে খাসা।


কষ্ট কখন গেছে;
মিহি মলমের মালিশের মতো মিশে
ভাতের নোলা হাতে
হাসি মুখে খাইয়েছো
ভিজে আঁচল মাখা গায়ে।
========
১৪২৪/২৪, আষাঢ়/বর্ষাকাল।