ক্ষুধা


____ক্ষুধা
ক্ষুধা দিকে দিকে,
পৃথিবীর এ প্রান্ত হতে ও প্রান্ত ব্যপ্তি।
ক্ষুধার জন্য ছুটে ছুটে-
পৃথিবী বাস যোগ্য হয়ে উঠার
প্রত্যয় ছিল বলেই;
আজ পৃথিবী মানুষের বাস যোগ্য।


তবুও ক্ষুধা মিটে কই?
ক্ষুধার জন্য লড়াই,
ক্ষুধার জন্য মৃত্যু,
ক্ষুধার জন্য দেশান্তর,
ক্ষুধার জন্য প্রজন্ম লড়াই,


_____অধিকারের বুলি
মুখে মুখে, দেশে দেশে, মানুষের মুক্তির অধিকারের বুলি। স্বাধীনতা পেলেই মুক্তি মিলে। আর মুক্তির পর অধিকার নিরুপন। কোথায় মুক্তি? কোথায় অধিকার? দন্যদশায় সেই একই আলখেল্লার সামিনায়; বজ্রমুষ্টির স্বপ্ন ক্ষয়ে যায়, পুড়ে যায়, পুঁজির দর্পদহনে। আবার সেই একই মিছিল মুক্তির তরে, থিতিয়ে যায় প্রজন্ম, নতুন প্রজন্ম গর্জে উঠে। এমনি ধারাবাহিকতা, তবুও মুক্তির অধিকার নাহি মিলে।


______পথেই তাদের সাজা
পথে পথে মানুষ,
পলিথিনের ঝুপরিতে ঘুমায়; কোলাহলে বস্তি
বুনে যায়! বাসস্থান মিটাবে বলে,
পুঁজির চোখ রঙিন চশমায় ঢেকে যায়;
যদি পেছনে কেউ ডেকে উঠে-
ঐ যে পুঁজির আড়ম্বর পালকি চলে
ওকে নামিয়ে আনো পথে? দেখব এবার
অধিকার না পূরণে কেমনে এরা বাঁচে?


এই হয়েছে সর্বনাশ!
আঁধার রাতে বস্তি গেল পুড়ে; এবার
কোথায় যাবে মানুষ; ক্ষুধা আর বাসস্থানের
সর্বহারা, সর্বক্ষয়া, নিঃস্ব হল
খোলা আকাশ তলে! এবার পুঁজি অট্টহাসিতে মজে
মানুষ বলে কথা; পথেই তাদের সাজা।


____অন্ন চাই উনুনে
অন্ন চাই উনুনে,
উনুনে শুধু পানি সিদ্ধ;
সাথে সামান্য নুন, কাঁচালঙ্কা আধখানা
দু'মুঠো চাল; আলু কাটা দু'টো।


পেটে ক্ষুধা,
হাঁড়িমুখ করে মা ইটের উনুনে
কাগজ পোড়ায়, ধুঁয়া উঠে আকাশ ছেয়ে যায়
দুধের বাটে ঝুলে আছে শিশু;
ঝুপরি ঘরে পাঁচ পাঁচটি মুখ
এদিক ওদিক চোখ টলমলে চেয়ে রয়
ক্ষুধার কাব্যে, ঝুপরি ঘর মৌ মৌ করে।


_____ক্ষুধার জন্য মুক্তি কই?
ক্ষুধার জন্য মুক্তি কই?
বাঁচার জন্য মুক্তি কই?
জীবনের জন্য মুক্তি কই?
অধিকারের মুক্তি কই?
নতুন প্রজন্মের মুক্তি কিসে?


আসন্ন দিনে সুবর্ণ স্বপ্নের মুক্তি চাই।
বিপন্ন পুঁজির লোলুপ গ্রাস থেকে মুক্তি চাই।


১৪২৪/২৪, আশ্বিন/শরৎকাল।