সারাটা শরীর জুড়ে ছোপ ছোপ ময়লা,
বিবর্ণ মুখশ্রী উসকো-খুসকো চুল,
চিরুনি কবে লাগিয়েছে, হয়তো মনেই নেই তার!
টুটা ফাটা প্যান্ট পরিহিত কিশোরটি
চোখ দুটি যেন দুনিয়ার বিস্ময়ে মাখা;
বয়স আর কতই হবে তার!!
বারো অথবা তেরো।


ফ্লাইওভারের নিচের অমসৃণ রাস্তার
ইট সুড়কির মাঝে বসে সে বিড়ি ফুঁকছে অবিরাম,
হাজার মানুষের আনা-গোনা রাস্তা ধরে;
বাস, কার, রিকশা অবিরত হর্ণ বাজিয়ে
পরিবেশ করে তুলছে ব্যস্ত,
ছেলেটির এসব কিছুতেই ভ্রুক্ষেপ নেই যেন!


বিড়ি ফুঁকছেই, বিড়ি ফুঁকে ফুঁকে চক্ষু রক্তবরণ,
আশেপাশে তার নোংরা কম্বল গায়ে আরো কয়েকটি
নিস্তেজ দেহ আপাদমস্তক ঢেকে শুয়ে আছে।


আমার ছেলের বয়সি ছেলেটি, আহ!
কষ্টে বুক ফেটে যায়,
কোথায় হারালো তার মা, কোথায় তার বাবা!
অবেলায় অকালে কোলহারা হয়ে আজ সে রাস্তায়
অবহেলায় দিনযাপন করছে।


ওদের দেখার কেউ কি নেই!
আচ্ছা! দেশের ক্ষমতাধরদের নিকট
একটা আকূল আবেদন কি রাখতে পারিনা?
পুনর্বাসিত কি হতে পারেনা অবহেলিত প্রতিটি শিশু,
আমার প্রতিটি ছেলে?
মাথা গোঁজার একটুকু ঠাঁই কি আমরা দিতে পারিনা;
রোজগারের একটা পথ, একটা শার্ট, একটা লুঙ্গিই না হয় হউক;
একটা চিরুনি, একটা সাবান, আর ছোট একটি আয়না।


এক চিলতে হাসি দেখার অপেক্ষার তর আর সইছে না আমার,
আমার ছেলেদের মুখে হাসি ফুটাতে শুধু প্রয়োজন
একটু প্রশাসন সহযোগিতা,
ক্ষমতাধরদের অবৈধ দখলের সম্পত্তি ছিনিয়ে
করা হউক না হয় ওদের একটু পুনর্বাসন।
চাওয়াটা কি বড্ড বেশি বিলাসিতা হয়ে গেল?
গণতান্ত্রিক দেশে এইটুক আশা করতেই পারি! তাই নয় কি?