বিনয়ের মাপকাঠিতে আমি কবিদের তিন ভাগে ভাগ করতে চাইঃ
১। বিনীতভাবে বিনীতঃ
এরা হচ্ছেন কবিদের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত চরিত্রের মানুষ; কারণ এই জাতীয় কবিরাই  একমাত্র আমিত্মকে বিসর্জন দিতে পারেন। তাই এদের মাঝে আত্মগৌরব, আত্ম-অহংকার, হিংসা-বিদ্বেষ প্রভৃতি নিম্ন শ্রেণির অভিব্যাক্তি ও ভাবের প্রকাশ একদম অনুপস্থিত। একমাত্র এই শ্রেণীর কবিরায় পার্থিব জগতের সব কিছু কে বিসর্জন দিয়ে নিজেদেরকে উৎসর্গ করেন  আধ্যাত্মিকতার নির্লোভ জগতে।
উদাহারনঃ খালিল জিব্রান
২। বিনীতভাবে অবিনীতঃ
এই ধরনের কবির সংখ্যায় জগত সংসারে সবচেয়ে বেশী এবং এরা সেই আদ্যিকাল থেকেই ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ থেকে দক্ষিন গোলার্ধ পর্যন্ত। যেহেতু তারা বিনীতভাবে অবিনীত তাই তারা সুকৌশলে বিনয়ের আড়ালে পৃথিবীতে অনেক হিংসা বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন, বন্টিত করেছেন ঘৃণার আঁচ মানবজাতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে, যার প্রতিক্রিয়া আমরা এখনও উপলব্ধি করতে পারি যুদ্ধ বিধ্বস্ত পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে চোখ বুলালেই। তাদের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু আত্মপ্রচার তাই পৃথিবীতে মানুষের মাঝে অনৈক্য সৃষ্টি করতে পারলেই তারা আত্মতৃপ্তি লাভ করে আর মুখোশের ভেতর তাদের অবিনীত স্বত্বাটা হেসে ওঠে। সম্ভবত শক্তি চট্যপাধ্যায় এদেরকেই উদ্দেশ্য করে বলে ছিলেন, “কেউ কেউ কবি নয়, সকলেই কবি”।  
উদাহারনঃ পৃথিবীর ৯০% কবিই এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।
৩। অবিনীত ভাবে অবিনীতঃ
এরা কবিতা লেখে গেলেও এদের কবিতা কেও পড়েনা। এরা আসলেই বোকার স্বর্গে বসবাস করেন সেই আদ্যিকাল থেকেই। আসলে তারা এতটাই বোকা তারা এটা বুঝতে পারে না যে, কবি হতে গেলে নুন্যতম বিনয়ের প্রয়োজন কারণ নুন্যতম বিনয়- বোধ ছাড়া কখনও কবিতার জন্ম হয়না। তবুও তারা ২য় শ্রেণীর কবিদের (বিনীতভাবে অবিনীত) চাইতে অনেক অনেক কম বিপদজনক কারণ তারা পৃথিবীতে কোন ধরনের প্রতিহিংসার মড়ক ছড়িয়ে দেয়নি; মন্ত্র ছুঁড়ে দেয়নি যার বিষে পৃথিবীটা পুড়বে অনন্তকাল।
উদাহারনঃ যাবতীয় ছাত্র নেতা যারা কবিতা লেখেন বড় নেতাদের তেল মারার জন্যেই অথচ সেগুলো কখনও কবিতা হয়ে ওঠেনা। চিরকালই অকবিতা হিসেবেই থেকে যায়।