তাঁদের কাহিনী শুনে ঝরিবে কি অশ্রুজল আঁখি কোণে? জাগিবে কি কালজয়ী অনল অন্তরে সবার?
নিঃশেষিত হবে কি লালসা, হিংসা, আর মদমত্ততার। ঘটিবে কি মুক্তি অনির্বাণ? তাই প্রশ্ন আসে বারে বার। জীবনের ছোট্ট সময় কাল, কালের গতিতে এমনিই করে টলমল। তবে কেন অন্যায়, অবিচার ঘাড়ে আনি টানি? ধরণীতে দুটো দিন থাকা, তবু কেন অশান্তিকে বারে বারে ডাকা?


          ঘটনা প্রবাহ শুরু সেই চোদ্দো বছর আগে, শেষ হলো সবে। আলিপুর কোর্টে। মায়ের কন্যা ছোট্ট শিশুটি ছিল হাসিখুসি ঝলমলে, পশু তন্ময় বসু ওরফে টিঙ্কু্র যৌন লালসায় আনন্দ উচ্ছল মা-মেয়ের সংসার ভেঙ্গে পড়ে নিরানন্দের কোলে। এত দুঃখে মা হাল ছাড়েনি  আলিপুর কোর্টে নির্যাতিতা কন্যার হয়ে মামলা করে। সদাশয় আইনজীবী সঞ্জয় কুমার কুন্ডু হলেন  তাঁহার সহায়। মায়ের অদম্য ইচ্ছায় হয় নাই পরাজয়। জয় পেলো চোদ্দো বছর পরে। মামলার গতিপথ চালাতে ভুল পথে পশু সম দানব তন্ময় বসু্র পাষন্ড আইনজীবীরা সরকারি নথি থেকে গুরুত্ব পূর্ন ডাক্তারি পরীক্ষার মূল কাগজপত্র উধাও করে দেয়। তাহাতেও নিশ্চয়ই কাহারও ছিল বুঝি সায়? আজ মানুষের মনে নানান প্রশ্ন? ওকালতি এক স্বাত্তিক পেশা, বিচারপতিকে সত্য উদ্ঘাটনে নিরলস সাহায্য করা, যেন সত্যের অমর্যাদা না হয়, মিথ্যার হয় পরাজয়। বিচার ব্যবস্থার বর্ধিত হউক মান, সত্যানুসন্ধানীর সুস্থ সমাজ, জাতি ও দেশের জন্য এই হউক তাঁদের দান। বন্ধু সংবাদিক মেহবুব কাদের চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানাই মানুষের পক্ষ থেকে তিনি ২রা জুন ২০১৮ তারিখে ১১ (এগারো) পাতায় সংবাদটি পরিবেশনের জন্য। শুধু বন্ধু সংবাদিকের কাছে প্রশ্ন করতে ইচ্ছা হয়, বাদী পক্ষের মাননীয় উকিল বন্ধু সঞ্জয় কুমার কুন্ডু মহাশয়ের নাম উদ্ধৃত করলেন, কেন নয় পাষণ্ড উকিলদের  নাম? সরকারের ভয়? না ওই পাষন্ডদের ভয়? মায়ের সন্তানরা অকাতরে মায়ের সম্মান রক্ষার্থে অহরহ জীবন দেয়, দেশে আনাচে কানাচে আর ঐ সীমান্ত এলাকায়। তাঁরা তো পায়না ভয়? আলিপুর কোর্টে হেরে গিয়ে হাইকোর্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায়, যদি কোথাও ভুল করে পশু তন্ময় বসু্র পক্ষে রায় দেয়। পাষন্ড উকিলরা যেনতেন প্রকারে কালক্ষেপের চেষ্টায় থাকে রত। যদি ইত্যাবসরে কোন পক্ষের মৃত্যু হয় তবে শয়তানের হবে জয় মিথ্যারে করি আশ্রয়। এরা না কি সত্যানুসন্ধানী? এদের থাকবেনা কোন দায়? সমাজের মানুষকে উচ্চস্বরে বলতে ইচ্ছা হয়, সমাজকে কলুষিত করার জন্য, অন্যায়ের পক্ষে সওয়াল করে সত্যকে উদ্ঘাটিত না করে অন্যায়কেই দিল প্রশ্রয়, এদের যেন প্রকৃত শাস্তি হয়। কবি গুরুর বাণী আনতে চাই মানুষের মাঝে টানি, “অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা যেন তাঁরে তৃণ সম  দহে”। শাসক, প্রশাসক, রাজনীতি, সমাজ সেবায় কেন আজ মিথ্যাচার আর অন্যায়ের বসন্ত মলয়? আমরা যদি সত্যিকারের ভাবনা ভাবি একবার? তাহলে বুঝতে পারবো কোথায় কার দরকার? তবেই নড়ে চড়ে বসবে সরকার।  


       উকিল বন্ধুদের বলি অর্থের লোভে, নিজের, সমাজের, জাতির এবং পরিশেষে দেশের স্বার্থ দিওনা বলি। ন্যায় পথ ছেড়ে অন্যায়ের পথ ধরে গভীর খাদে পড়তে হবে, হোথায় আলো নাই শুধুই আঁধারে পাবে যে ঠাই। পালাবার পথ নাই। কে বাঁচাবে তোমারে? সব কিছু যেতে হবে ছেড়ে, অন্যায়ের দোসর বলে ঘৃনায় মুখ ফিরায়ে নেবে সবে। কোথা যাবে? আত্মার আত্মীয় যাদের আপন ভেবে সম্পদের পাহাড়ের উপর রেখে যাবে, তাঁরা কি ভাবে মুখ দেখাবে এই সমাজে? সত্য, সে যে সত্য, দিনের আলোর মত আর মিথ্যা সে যে অন্ধকার, শাস্তির নামান্তর। উকিলদেরও থাকা  উচিত সামজিক ন্যায় বোধের কোড। কতটা অন্যায় হলে সমাজের থাকেনা ভয়, কত পথ সে   আঁধারে হাটিবে মোট? ঠিক করে দিক উকিল সমিতি গড়ে তুলুক সর্ব্বোচ্চ জুরি বোর্ড। ভালোর  শেষ নেই, মিথ্যার শেষ আছে সে যে অতি কাছে। মনুষ্যবোধ আর মানবিকতা দেয় যে বারতা উপেক্ষা করার নয়, মনে প্রানে গ্রহণ করিলে চিত্ত চেতনায় থাকে না ভয়। ক্ষনিকের দুঃখ-কষ্ট সয়ে সত্যের হবে জয়, মানুষ থাকিবে নির্ভয়।  


        বিচারপতি বন্ধুদের প্রতি রেখে যেতা চাই ছোট্ট দু-চারটি কথা। বন্ধু ধরে নিও এ আমার মনের ব্যথা। তোমাদের উপাধী বিচারপতি, বলতে পারি শেষ বিচারের স্বামী; হেথায় অতি নগণ্য আমি, ন্যায়দন্ড হাতে বসে আছ দেবতুল্য অনুপম বসনে তুমি সর্ব্বোচ্চ আসনে। তোমার চেতনায় তোমার বিচার বুদ্ধিতে সত্যে পেয়েছে ঠাই, ভাবি মোরা সাধারণ মানুষ তাই। তুমি বাদী,  বিবাদী সাক্ষীদের গীতা কিংবা  কোরান ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করাও সত্য বলার স্বার্থে। কেন নয় উকিল? কেন নয় তুমি নিজে? ভাবনায় থাকে মিথ্যার স্থানে সত্য এ যে। দায়বদ্ধ সবাই আমরা সত্যের কাছে। তবুও একবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া- ভুলে যাই  মোরা পিছে। অর্থই, অনর্থের মূল আমরা বলি এবং জানি সবাই তবু অর্থের কাছেই বিকিয়ে যাই। আমরা দেখি সেই পরম সত্য লোকসভা, কিংবা বিধানসভার  জনপ্রতিনিধিরা অর্থের বিনিময়ে ছাগল গরুর মূল্যে বিক্রি হয়। এই তো সেই সর্ব্বোচ্চ আদালত দেশকে এবং তাঁর জনগনকে ভবিষ্যতের সুখ স্বপ্নের আলো দেখায়। এরা কি  সত্যিই জনপ্রতিনিধি? যারা অর্থের লোভে মানুষের বিশ্বাস ব্যক্তি স্বার্থে জলাঞ্জলি দেয়। তাঁরা বার বার কেন আসবে ফিরে ভেসে ভেসে মিথ্যার নায়? সত্য জাগ্রত হউক মানুষকে ধরে ভোরের প্রদীপ্ত আলোয়। আমরাই পারি- যদি সত্যিই ধরি, তবেই মনুষ্যত্ববোধ, বিবেক বুদ্ধি  জাগ্রত করে মানব সমাজের মঙ্গলের তরে মিটাতে পারি মানুষের দায়। এসো বন্ধু সত্যের তরে সঠিক বিচারে যেন - না পাই ভয়। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে উকিল জুরী বোর্ডের উপদেশ নিতে হবে এবং দিতে হবে এ ছাড়া আর  উপায় কোথায়? যতই কঠিন হউক  মানুষের তরে, মিথ্যাকে ছেড়ে সত্যেকে নেবো মানুষ হিসাবে বুকে টেনে এই জীবনে।


        মায়ের জয়ে, সত্যের ভয়ে মিথ্যারা বিলীন হউক। ন্যায়ের দন্ড সত্যিকারের মানুষেরা সূর্য্যের রশ্মির মত নিজেদের হাতে তুলে লউক।  
              সুস্থ হউক শান্ত হউক
                   এই বিচারালয়;
              পাপীতাপী সকল মানুষের,
                   কেটে যাক ভয়।


       সবাইকে বলবো আশির্ব্বাদ দিতে সেই মায়ের শিশু কন্যাকে যে আজ বড় হয়ে নেতাজিনগর থানা এলাকায় বি এ প্রথম বছরের ছাত্রী।
             তুমি সত্য পথের পথিক হও মা,
                    হও মা তুমি জ্ঞাননিষ্ঠ ছাত্রী;
             নির্ভয়াদের তুমি ভয় হর মা,
                    অজ্ঞাণীদের হও জ্ঞান দাত্রী।
              
               শেষ টানি আর এক অভয়ার কাহিনী।


১৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫,বঙ্গাব্দ,
ইং ২রা জুন ২০১৮ সাল,
শনিবার বিকেল ৩টা।     ৪৯১ তাং ০৪/০৬/১৮।