হটাত করে কবিদের , বিশেষত রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিশেষ উত্সাহ  দেখতে পাচ্ছি।  কারণটি বানিজ্যিক সন্দেহ নেই , কিন্তু আমার চিন্তা সেই সব সুধীজনদের নিয়ে , যারা এতে উত্সাহ যোগাচ্ছেন। 'কাদম্বরীদেবীর সুইসাইড-নোট' বা 'আমি  রবি  ঠাকুরের  বউ ' দুটো বইয়ের লেখক এক , রঞ্জন  বন্দ্যোপাধ্যায় , যিনি নিজেকে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ভাবেন।  এবার কলকাতা বইমেলাতে, ওনার বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে, ওনাকে  বক্তব্য রাখতে শুনলাম। রবীন্দ্রনাথের প্রতিটি লেখাকে তাঁর ব্যক্তি জীবনের সাথে জুড়ে দেবার প্রচেষ্টা সমর্থন যোগ্য নয়।    তবে এসব বই এর বিক্রি দেখলে অবাক হতে হয়।  
নামে ঠাকুর থাকলেও রবীন্দ্রনাথ মানুষ।  সারা জীবনে এত অবশ্য পাঠ্য লেখা লিখেছেন , যে তাতে অবগাহন করলেই জীবন ধন্য হয়।  তাঁর লেখায় যে ছবি ফুটে ওঠে পাঠকের কাছে সেটাই সত্য। কবির লেখায় তাঁর জীবন বোধ , শিক্ষা , পরিবেশ, রাজনৈতিক মতাদর্শ  ইত্যাদি উঠে আসবেই।  কিন্তু কাব্য একমাত্রিক হতে পারেনা , হওয়া উচিত নয়।  
জীবন উপরে উঠে যাবার সিঁড়ি , প্রত্যেকটি ধাপ পার হতে হয় বটেই , কিন্তু কোনো একটি বিশেষ ধাপ তো সব হয়ে দাঁড়ায় না। তাই কবির ভাষায়
"তবু তুমি একবার খুলিয়া দক্ষিণদ্বার
বসি বাতায়নে
সুদূর দিগন্তে চাহি কল্পনায় অবগাহি
ভেবে দেখো মনে-"


কবি নজরুলের ভাষায় বলি
"তোমা হ'তে শত বর্ষ পরে -
তোমার কবিতাখানি পড়িতেছি,
হে কবীন্দ্র,
অনুরাগ ভরে ।"