মশাইরা, একটু শুনবেন ,
আমি প্রিয়ব্রত রায় (৪৮)
আমার প্রেসার নর্মাল ,
পালস বীট বাহাত্তর থেকে আশি ;
আমার ছোট ছেলে এবার অ্যানুয়াল পরীক্ষায় ফোর্থ হয়েছে ,
আমার স্ত্রীর শেষ কেনা শাড়ীর দাম
একশো পঁচিশ টাকা।
এবং আমি তিন মাসে ছাপান্ন টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে থাকি।
আর এগুলোই কি আমার বেঁচে থাকার নির্ভরযোগ্য প্রমান নয় ?


মশাইরা , বয়েসটা যখন ছিল কুড়ির গায়ে
ত্রিশ বছরের চওড়া নদীর ওপারে তাকিয়ে বলতাম ,
পঞ্চাশ বছর বয়েস হলে কপালে রিভালভার ঠেকিয়ে......... ...  
মশাইরা , ইদানীং হাল এমনই দাঁড়িয়েছে
কোনো এক অদৃশ্য রিভালভারকে ভয় করে চলতে শিখেছি।

আমরা যারা সূর্যের দিকে মুখ করে চলতাম ,
তারা আজকাল রোদের দিকে পিঠ ফিরিয়ে দিয়েছি -
আসলে আমি তাদের দলে পড়ে গিয়েছি
যারা কোনদিনও ঠিক করে উঠতে পারেনা
স্বমূত্র সেবন করে আশী বছর বাঁচা ভালো ,
না নিজের রক্ত ঝরিয়ে বিশেই মরা ভালো।


তবু এখনো তো ভাবতে পারি যে ,
আমি পারি -
চেঁচিয়ে কিছু বলতে
সত্যি কথা লিখতে ,
জেলে যেতে
অথবা ভালো কোনো কারণে
হঠাত মারা যেতে।
মশাইরা এই সবই পারি এখনো ,
একটিই কারণে
তার নাম বেঁচে থাকা।


(রচনা কাল : ১৯৭৮ সাল , আমি তখন কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্র। এটা বললাম , কারণ কবিতাটাকে  সম্পাদনা করিনি , তাই কিছু সংখ্যা, আজকের নিরিখে অদ্ভুত মনে হতে পারে। )