মনের গুহায় লুকিয়ে থাকা গুণাবলী
ভালোবেসে বাণীবন্দনায় শব্দ দিয়ে মালা গাঁথি
ভালোবেসে বিদ্যাদেবীর আরাধনা কতজনা করে
শব্দের মালা গেঁথে সেই মালা ক ‘জনাই পরে
সুতীক্ষ্ণ নিপুণা বুদ্ধি হবে যখন
ভালোবেসে বীণাদেবী বীণা বজায় তখন
স্বল্পস্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী যে সুরেই বীণা বাজে
ভালোবেসে সংবর্ধিনী সৃষ্টি বলে সংশয় ছেদন করে
বিদ্যাদেবীর বীণা নিত্য মুক্ত সদা জাগরিত রয়
দেহাদি প্রপঞ্চ যে মিথ্যা ভালোবেসে সদা সেই কথাই কয়
ইন্দ্রিয় মন বুদ্ধি যে সংকল্প বিহীন হয়ে ভালোবেসে জ্ঞানদেবীকে আপন করে
গুণেতে বদ্ধ না হয়ে নিত্য মুক্ত থেকে দেহধারী হলে দোষ কি তাতে
পূজা আর হিংসা, সুখ দুঃখ, শুভাশুভ বীণাদেবীর বাদ্যে সমতুল্য
ভাল মন্দ, মান অপমান ভালোবেসে সদানন্দে  থাকে তুল্য
সমদর্শী গুণ দোষ বর্জিত ভালো মন্দে সমতুল্য
বিদ্যাদেবীর বীণায় আত্মারাম হয়ে ভালোবেসে থাকে অজ্ঞ
জ্ঞানকে ভালোবেসে সমদর্শী হয়ে বাজে যে বীণা
সন্দেহ থাকে না মুক্তির সুপাত্র তারা
ভালোবেসে বিদ্যাদেবীর শব্দব্রহ্ম  বেদ শাস্ত্রে পন্ডিত  হলে
কিন্তু পরব্রহ্ম ধ্যানে তোমার মনোযোগ না রাখিলে
বন্ধ্যা গাভী পালনে যতেক শ্রম বিফল হয়
বিদ্যা বীণায় সুর তাল লয়ের অভাব কিন্তু সেই কথাই কয়
এ বিশ্বের মাঝে ভালোবেসে সৃজন পালন লয় যার বীণায় না বাজে
বৃথা সেই বাদ্য, বৃথা সেই ধ্বনি কানে আসে।
ভালোবেসে বীণায় যদি বাজে ঈশ্বর লীলা অবতার জন্ম কথা
সার্থক জন্ম ধরে ধরার ধরণীতে যথা
আত্মার বহুত্ব ভ্রম ত্যাজি শুদ্ধ চিত্তে
ভালোবেসে কার বীণায় বাজে এর সুর বিধিমতে
বীণাদেবীর বীণায় ব্রহ্মতে নিশ্চয় করো মন
অথবা ভালোবেসে ঈশ্বরে সকল কর্ম করো অর্পণ
যে বিনার সুরে মনের ব্যাথা যায় দূরে
ভালোবেসে তাহাই সার কথা জেন মনে
আকাশ সমান তুমি সদা সঙ্গহীন
নাকি ভালোবেসে বীনার সুরে বুঝিয়ে দাও তুমি নও সঙ্গ বিহীন
বীণা হাতে প্রকৃতির পরব্রহ্ম পুরুষ প্রবীণ
অথচ ভালোবেসে সুরের খেলায় তুমি যে চিরনবীন
বীনার সুরে মন জয় করে স্বধর্মে নিরত থেকে
ভালোবেসে নিরীহ কোমল চিত্ত দিলে গড়িয়ে
বীনার সুরে পরকে বুঝতে পারে না জানে বঞ্চনা
ভালোবেসে ষড়গুন বিজয়ী সে জনা
বীনার সুরে কারুণিক হয়ে সদা জ্ঞানের সুর তোলে
তাকে ভালো না বেসে ভুলে থাকা সহজ না হবে
বীনার সুরে কর্মের কীর্তন করে গুণ মনোহরে
জ্ঞানকে ভালোবেসে অভিমান শুন্য হয়ে দম্ভ ত্যাগ তারই সাজে
ভালোবেসে বাজে যদি মৃদঙ্গ বীণা পণবাদী যন্ত্র
নিজেই ভুলে যায় তার নিজমন্ত্র
কোকিলালাপ মধুর বীণা যিনি বাজাতে জানে
ভালোবেসে এ ব্রম্হান্ড তিনিই ধরে রাখে
রবির রশ্মি যে বীণায় বাজায় প্রেমের বাঁশি
ভালোবেসে সে ধারায় ধরায় আমি খেলা করি
বাঁকা বাঁশের বাঁশরীতে অবাক করা বীনার সুর মেখে দেয় শরীরে
মেঘ যেমন ভালোবেসে বাজায় তার বাঁশি আষাঢ় শ্রাবনে
ভালোবেসে জীবন বীণায় যে গড়েছে সুর
ধুলার দেহে প্রাণ দিয়ে করেছে সুমধুর
ভালোবেসে বিজ্ঞানের বীণা হাতে ঘুরে বেড়ান যিনি
ব্যবহারিক বিজ্ঞান নাকি অধ্যাত্ম বিজ্ঞান কোনটা জানেন তিনি
সর্বাঙ্গসুন্দরী জ্ঞানকে ভালোবেসে বীণা হাতে করি
সুরের মূর্ছনায় হৃদয়ে এঁকে দেন দীর্ঘস্থায়ী প্রাণ পাখি
হৃদয় বীনার সপ্তসুরে গেঁথেছি যে মালা
ভালোবেসে গলায় পরবো না পরাবো ভেবে যায় যে বেলা
জ্ঞানকে ভালোবেসে চেতনাকে নিরন্তর জাগ্রত করে
মনোবীণার তারে বেঁধে নাও সুর তুলে
হৃদয় বীনার সপ্ত সুরের মাঝে বিদ্যাদেবীকে জাগিয়ে
জ্ঞানকে ভালোবেসে বাগদেবতার জলকেলি রম্য সুস্থান দাও গড়িয়ে
গানকে ভালোবেসে বীনাকে সখীর ন্যায় রাখ কক্ষ সঙ্গিনী করে
বিদ্যাসুন্দরী লাভে কত যত্ন করো তুমি সকল কিছু ভুলে।


(চলবে )