মা!
উষার লগ্নে , হালকা ঘুমের আবছায় ,
অবচেতন মনে ডাকি ,
উহু ,
আলো! মা , মা
তুমি জানালা খুলেছ নাকি!


তুমি বল উঠ ,
সকালের হাওয়া ,
আর প্রকৃতির চাওয়া ,
গায়ে লাগিয়ে নাও!
উঠ ,
বাইরে যাও।


সামান্য বিরক্তে ,
বাইরে বেরিয়ে ,
নির্মল আকাশ দেখার ভাগ্য কজনের!
আমায় সেই ভাগ্য করে দেওয়া , এ
যেন ,তোমার ডায়েরী!
প্রতিদিনের্।


অতঃপর ফ্রেশ হয়ে ,
মা , ভাত দাও , বলে ডেকে , অস্থির
আমি ,
ক্ষুধা লেগেছে !
তাড়াতাড়ি দাও!
তোমার জবাব:
ছেলের কান্ড দেখেছ ,
হাতটিও ধোয় নাই ভাল করে ,
যাও ধুয়ে এস যাও।।


উদরপূর্তি করে ,
কখনো বা টিভিতে বা কম্পিউটারে ,
অথবা , মাঠে গিয়ে মজি
খেলার ঘোরে।


এ ছেলে কবে ঠিক হবে ,
চিন্তা তোমার ,
এদিকে কি বলে ১০ টি টাকা পাব ,
ধান্দা আমার!


তুমি ভাব , আমি করব কি!
আমি ! ১০ টাকা দিয়ে হবে না ২০
টাকা চেয়ে নেয়া যাবে কি!
অবচেতন এই মন ,
যেন তোমার কাপড়ের আচলে ঢাকা ,
দুপুরে ক্লান্ত শরীরে ,
ঢুলুঢুলু করে তোমার কাছে ফিরি ,
একা।।


স্নানের জন্য দুটি কথা শুনে ,হয়
নদীতে নাহলে কলে (টিউবওয়েল),
গাত্র আমি করি শোধন ,
কয়েক মগ জল ঢেলে।
ছেলে এখন ছোট বলে ,
গা দাও মেজে ,
ইস আস্তে! বলে চিতকার আমার
মাঝে মাঝে!


অতঃপর টেবিলে গমন ,
দুপুরের করে পারন ,
ঠিক আবার খেলার মাঠে ,
নয় কম্পিউটারে ,
পড়ার কথা তো ষোল আনাই ফাকি ,
শুনিনি তোমার বারণ।।


সন্ধ্যায় পড়তে বসে ,
৪ টি ঘন্টা কেমনে যায় কেটে ,
স্যার আসলে , কেমনে পড়া দিয়ে ,
তাড়াতাড়ি শেষ করা যায় ,
মাথায় শুধু অই বুদ্ধিই আটে।
'পড়াশুনা ছেলে এত্ত করে!'
এছেলে ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার
হবে'-
স্যারের কথা শুনে ,
মুখ তোমার পুলকিত ,
আর আমি চমকিত !
যেখানে আমি ফাকি দিতে দ্রুত পড়া শেষ
করি ,
সেখানে কেমনে বয় আনন্দের লহড়ি?


ভাবি চিন্তাকুল মনে !
খেয়ে আবার ফেসবুক রাতে ,
সারারাত চ্যাটিং ,
মেয়েদের প্রপোজিং ,
মুচকি মেরে হাসা .
আবার কখনো ঝগড়া কারও সনে!!


বাবার কথার বালাই নেই ,
তোমার সেই ঘুমের আদলে কথা ,
'বাবা শুয়ে যা। '
এভাবেই কাটে দিন ,
বুঝিনি ,
কখনো টেরও পাইনি ,
তোমার কাছে রয়েছে আমার কত ঋণ!


রাতের নির্জন
আকাশে বেশি আমি যাইনি ,
গিয়েছি মন খারাপের তালে ,
ফলাফলের চিন্তা ,
সম্মানের চিন্তা ,
যদি কখনো ভরাডুবি হয়!
সেই ভয়ে মাঝে মাঝে মেরে দাও দুগালে।


আমি জানি ,
তুমি জান ,
আমি অত ভাল ছাত্র না ,
মূল্যায়নের তুলাদন্ডে ,
আমার ওজন সত্য মাত্র কয়েক সিকি ,
তবু কর ব্যয় ,
না অপব্যয় ,
যদিবা কষ্মিনকালে ছেলে এতটুকু ভাল হয়!


আজ আমি কিছুটা বড় ,
কিছু বুঝি ,
কিছু জানি ,
তোমার আশা জানিনা হয়ত শুভংকরের
ফাকি ,
এই বুঝি ,
চেয়েছেন অন্তর্যামী।।


মাঝে মাঝে শুনে তুমিও অতিষ্ঠ হও , --
''আমার ছেলে বুয়েটে পড়ে ,
আমার ঢাবিতে ,
আপনার?
ওর ইচ্ছা কি?
ও পড়াশুনায় কেমন?''
তোমারো খারাপ লাগে ,
যখন সবকিছুতে 'না' বলে শ্রান্তের মত
কথা কও।


আজ এই উদাস বেলা ,
বড় মনে পড়ে এসব কথা ,
সব জেনেও যে সাপোর্ট দেয় ,
নেই কোন যার আজ ইচ্ছা
সে আর কেউ না ,
সে আমার ''মা -মাতা"।