আফগান আজ ক্ষুধার্ত জনপদ
ধর্মের মোহিত বাণীর সুরেলা ধ্বনির চেয়ে
একটুকরো রুটির প্রার্থনা আজ বড় ইবাদত,
লঙ্গরখানা নিঃশ্বাসের ধোঁয়াশায় উঁকি দিতে চায় প্রতিবেলার আহারে
বিকেলের ধুপকাঠিতে গ্রন্থ অসহায় চেয়ে আছে নিরুপায়।


বাবা যুদ্ধের ময়দানে মৃত লাশ।
যুদ্ধে শিশুর চোখ অন্ধ; মা অসহায়;
আক্রোশের আড়ালে সর্বাঙ্গীণ আবৃত তন্তুর আড়ালে,
শিশুর অন্ধ চাহনি মানবতার পোষ্টার,
একটুকরো রুটি ক্ষুধার্তের চেয়েও বিদ্রোহী
সহজ মানুষেরা সয়ে যায় পাশবিক অনাচার।


এই পৃথিবীতে কত ধর্ম, কত বিধাতা!
কোনো বিধাতা কী একটুকরো রুটিও—
আকাশ হতে ফেলতে পারে না?
অথচ বাণীতে জেনেছি;
তারা পারেন না; এমন কিছুই নেই মহজাগতিকে!
অন্তত একবার আজ রশ্মির বদলে রুটি ঝরাক
মানুষগুলো সেই রুটিতে ক্ষুধাহীন হয়ে যাক,
অথবা পৃথিবীর সমস্ত মানুষ বিজ্ঞানের কোনো উপকরণ ব্যতিত
শুধু প্রার্থণা করে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিক সেই অন্ধ শিশুটির।
তারাই তো করেছেন সৃষ্টি তাদের পুতুলেরে;
এমন অবগাহন করেছি কত শত বাণীতে,
শুধু একবার তেমন অলৌকিকতা ছেঁপে যাক কোনো এক বিধাতার;
আফগান ক্ষুধার্ত মানুষের ঘরে।


সব শেষ গ্রন্থে কোনো এক বিধাতা বললেন—
‘আমি আর অবতার প্রেরণ করবো না’
তবে কী কেউ গোপন অভিসন্ধিতে বিধাতাকে
নিজের সম্পদ করে নিয়েছে!
নাকি তিনি জানতেনই না
পৃথিবী নামক গ্রহটি শুধু এক অঞ্চলের নয়।
কত শতবার সেই বাণীতে প্রজ্বলিত হয়েছি, হয়েছি শংকিত, ভীত
বিধাতাদের ইচ্ছাবিহীন কী হতে পারে? যা মানুষ দিতে পারে!
অনাদৃত পৃথিবী নিজেই জানিয়ে দেবে তার উৎপত্তি;
সৃষ্টির মগ্ন কিছু মানুষের কল্যাণে—
বিবর্তন পরিক্রম লঘুতাই মানুষের শেষ আশ্রয়!


তবে কী বিবেকবান মানুষেরা বিধাতার চেয়ে পরীক্ষিত?
ভর্ৎসনা আর বিতারিত হয়েছে যারা ধর্মের বাণীতে;
একদিন হয়তো প্রসারিত হবে তাঁদেরই হাত;
বেঁচে যাবে ক্ষুধার্ত মানুষগুলো।
বেঁচে যাওয়া মানুষ গুলো আবার মানবতার বন্দনা রেখে
গাইবে মর্মরিত বাণীর গান—
হে বিধাতা তুমিই যে অধীক মহান;
হাত তুলে আকাশেতেই বিধাতায় চাইবে নাজাত।


কী অদ্ভুত বিচলিত মানব জীবন!
কস্মিনকালেও সে জানে না, কী ছিল তার অপরাধ?


-------------------------------------------------------------
( আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ-এর উক্তি: ”তালেবান ক্ষুধা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দেয়নি, সৃষ্টিকর্তার কাছে খাবার চান” বিগত দিনের ধার্মিক, ধারক, বাহক ও মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দদের মতো মানুষদের উদ্দেশ্য করে লেখা।)
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, শঙ্কর, ঢাকা।