হাট আর বসেনা হাটে, ঘাট- পোনা ভাসেনা ঘাটে,
কোথায় ডানকাণা মাছ, খাল-নদীর বাঁকে?
বিল ভরতি বক পাখি, আপন রবে ডাকাডাকি,
আজকাল বড় একটা উড়েনা ঝাঁকে ঝাঁকে।
পাল তুলে রসিক নেয়ে, ভাটিয়ালি যায় না গেয়ে,
জল ভরণে ঘড়া কাঁখে, দেখি না সেই বধু,
গাঁয়ের সে ধূলিতে খেলা, হর্ষে কাটতো সারা বেলা,
মৌচাক ভেঙ্গে তেমন, খায় না তো কেউ মধু।
খাল-নদীতে জলকেলি, কত সুখ এসেছি ফেলি,
আজকাল নর্দমায় পরিণত সেই নদী !!
নদীর মাঝে যত জল, হয়েছে দূষিত অচল,
পচা জলের পূতিগন্ধ, বইছে নিরবধি !!
নেই কোন খেয়া ঘাঁট, ঘুচিয়েছে সকল পাট,
নদীগুলো শুকিয়ে আজ, চড়ায় পরিপূর্ণ,
নদী ভেঙ্গে যে মরু হল, জনপদ নিশ্চিহ্ন হল,
জনগণের স্বপন ভেঙ্গে, হয়েছে বিচূর্ণ !!
প্রাণো বন্ধু প্রণো সই, আগের দিন গেলো কই,
প্রকৃতির কেন এমন কঠোর অবিচার ?
জনসংখ্যার বিস্ফোরণ, এটি অন্যতম কারণ,
দীনতা হরণ করলো বাঁচার অধিকার !!
পরিবর্তনের আকৃতি, দৃশ্যমান সে যথারীতি,
পূর্বেকার অনেককিছুই, বিলুপ্তির পথে,
খাঁটির মুখে কালো ছাই, এ বেদন কারে জানাই,
নকলকে খাঁটি বলে, চালায় ওদের মতে।
ভ্রাতৃ প্রেমের নিবিড়তা, একে-অন্যের ব্যাকুলতা,
কত যে মধুর ছিলো, ভ্রাতৃত্বের সেই রীতি !!
অনুরাগের পরিবেশ, সকলই হয়েছে শেষ,
হারিয়ে গেছে মনুষ্যত্ব, হারিয়ে গেছে নীতি।
একই গর্ভ হতে জাত, এক মায়ের দীক্ষাস্নাত,
স্বার্থ সিদ্ধির তরেই তারা সাধে বিভাজন,
গুরুজনকেও মানে না, পিতামাতাকেও চিনে না,
সাবালক হলে পরেই ভুলে আপনজন।
সংখ্যাহীন পরিবর্তন, কালের এই বিবর্তন,
সৌভ্রাতৃত্ব উবে গিয়ে নির্মমতার প্রভাব,
সর্বত্রই কোন্দল আছে, বিবাদ আছে জলে- মাছে,
সদরে-ভিতরে আজ শুধু, শান্তির অভাব।
ঘটমান পরিবর্তন, এই সত্য যে চিরন্তন,
এ যেন সৃষ্টির রহস্যের সনাতন ধারা,
হাসি- কান্নার এ ভুবনে, শূন্যতা থাকবে জীবনে,
পূর্ণতায় সূচিত জীবন, শূন্যতায় সারা ।
পরিবর্তন সৃষ্টি-ধর্ম, বিবর্তনের এই কর্ম,
পরিবর্তন ঘিরে যেন পরিতাপ না করি,
মনের সব খেদ মুছি, পরিবর্তনে হই শুচি,
এই সংকল্প করি আজ, জড়তা পরিহরি।।