আমার আইডেন্টিটি কার্ড
আমি নিজে ; আমি  স্বপ্রকাশ ।
কোন আইডেন্টিটি কার্ডে  আমার
আসল পরিচয় খুঁজে পাবেনা ।
পারবেনা কোন
আইডেন্টিটিফিকেশন মার্ক দিয়ে
আমাকে সনাক্ত করতে।
পৃথিবীর কোন প্রশংসাপত্রে ও
আমার ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠবেনা ;
পারবেনা কোন কিছু দিয়ে
আমার স্বরূপ ব্যাখ্যা করতে ।
আমার বিদ্যার বহর জানতে আমার
পরীক্ষার মার্ক-শিট খুঁজে
আমাকে লজ্জা দিও না ।
আমি যা জানি
যতটুকু মনে রাখতে পারি
আমার বিদ্যার পরিচয় ততটুকুই ,
তার চেয়ে বেশি নয় ।
আমার নাম আর ধাম
জিজ্ঞাসা করছো ?
তোমরা  যে নামেই
আমাকে ডাকতে ইচ্ছে করে
সে-নামেই তোমরা ডাকতে পারো ।
গাধা বূর্বক বা অপদার্থ বলে ডাকলেও
আমার তাতে আপত্তি নেই ।
তোমাদের বিচারে যদি আমি
সেটাই হই তবে আমি তাই ।
আদর বা অনাদর করে যে নামেই
আমাকে ডাকোনা কেন,
তাতেই আমি হাসিমুখে
সাড়া দিয়ে যাবো, কারণ, ছোট থেকেই
সে সব কথা শুনতেই যে আমি অভ্যস্ত ।
তাই তোমাদের নিন্দাসূচক সম্বোধনগুলি
আমার মনে কোন দাগ কাটেনা ।আবার
প্রশংসাসূচক বাক্য শুনতেও
আমার একদম ভাল লাগেনা।
সেগুলি যেন সূচের মত
আমার গায়ে এসে বিঁধে ।
আমি কোথায় থাকি জিজ্ঞাসা করছো ?
হ্যাঁ, আমি যাযাবর ।
আমার কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই।
এই সমগ্র পৃথিবীটাই আমার বাসভূমি ।
‘ভোজনং যত্র তত্র শয়নং হট্ট মন্দিরে’-
অনেকটা এই ধরনের বলতে পারো ।
যেখানেই ভালো লাগে,
যেখানেই পেটের ক্ষুধার রসদ
যোগাড় করার জন্য কাজ খুঁজে পাই,
সেখানেই খুঁটি গেড়ে বসে যাই ।
রসদ যোগাড়ে ভাটা পরলেই
পা বাড়াই নতুন আস্তানার সন্ধানে ।
জীবনটা আমার কাছে এক এডভেঞ্চার ।
এই এডভেঞ্চারে পা পিছলে পড়ে
পঞ্চত্ব প্রাপ্তি ঘটলেও আমার
একটুকুও আপসোস থাকবেনা ।
কারণ আমি যা পেয়েছি
তাতেই আমি সন্তুষ্ট ।
এই পৃথিবীর মানুষকে
আমি যা দিতে পারছি
তার চেয়ে ঢের ঢের
বেশী আমি পাচ্ছি ।
তাই মানুষের প্রতি
কৃতজ্ঞতা জানানোর মতো
ভাষা আমার নেই ।
পরপারে যাওয়ার ডাক যদি আসে
তবে হাসি  হাসি  মুখে তোমরা
আমায় বিদায় দিও ।
আমিও হাসতে হাসতে  চলে যাবো
মানবজীবন ধন্য হয়েছে
বলে মনে করে
এই পৃথিবীরই কোন এক
অজানা  নতুন দিগন্তে ।