কবি-পত্নী-     কবিতা,কবিতা খালি কবিতা ;
বলি হ্যাঁগো ; কবিতা আবৃত্তি করে
আর রাশি রাশি কবিতা লিখে
করবেটা কি শুনি ?এতে কি
তোমার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বাড়বে ?


কবি-   হ্যাঁ,হ্যাঁ, নিশ্চয়ই বাড়বে ।
তবে এ ব্যাঙ্ক টাকার
ব্যাঙ্ক নয় ,বুঝলে ।
এ ব্যাঙ্ক হোল আনন্দের ব্যাঙ্ক ,
জীবনের সুখের ব্যাঙ্ক ।
ইচ্ছে থাকলে এ ব্যাঙ্ক থেকে যে কেউ
আনন্দে বেচে থাকার উপাদান
সংগ্রহ করে নিতে পারে ।
শুধু উপভোগ করার মতো মন চাই ।
আর ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সের কথা বলছো?
আমি যা করি তাতে ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স
তোমার হিসাবে না বাড়লেও
আমার হিসাবে বাড়ে ।
কিন্তু তুমি যা কর
তাতে আমার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স
অনেক অনেক বেশী কমে ।


কবিপত্নি –কি, কি বললে তুমি ?
আমি তোমার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স কমাই ?
তোমার যদি চোখ থাকতো
তবে দেখতে আমিই সুন্দর
ফুটফুটে জলজ্যান্ত একটি কবিতা ।
তুমি যদি সত্যিকারের মানুষ হতে
তবে এই রক্ত মাংসের মানুষটাকেই
কবিতা মনে করে সুখের সাগরে ভাসতে ।
তোমাকে আর এতো পরিশ্রম করে
কাগজ কলম নষ্ট করে
কবিতা লিখতে হতোনা ।


কবি –  কবিতার মর্ম তুমি আর কি বুজবে ?
তুমি তো কবিতা রচনা কর
ক্রিম, পাউডার , লিপস্টিক , নেল-পালিশ
সুন্দর সুন্দর গয়না আর নানাধরনের
রংবেরং-এর শাড়ি ব্লাউজ দিয়ে ।
তোমার কবিতার রূপলাবন্য দেখে
ছেলেদের মাথা ঘুরে যায় ,
আর মেয়েরা হিংসায়
জ্বলে পুড়ে মরতে থাকে ।
তোমার কবিতা ক্ষণস্থায়ী,
কিন্তু আমার কবিতা
চিরস্থায়ী না হলেও অন্তত:
আমার মৃত্যু পয্যন্ততো স্থায়ী হবেই ।
তোমার কবিতার উপাদানগুলি
মানুষের সৃষ্টি ; আর আমার
কবিতার সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং ঈশ্বর  ।
তাই কবিতা আমি লিখিনা ,
আমাকে লেখায় সর্বশক্তিমান ভগবানেই ।
সে সর্বশক্তিমান ভগবান যদি
আমার উপর ভর না করতো
তবে কি আর কবিতা বের হতো ?
তখন হয়তো বের হতো
মুখ দিয়ে শুধু কটু কর্কশ বাক্য ।
আর তখন তুমিও
এই কবিতার বেশ ধরে
আমার সামনে হাজির হতে পারতে না
তখন তুমি আমাকে মনে করতে
সত্যিকারের জলজ্যান্ত একটা ভূত ;
আর তোমার পরিচয় হতো
সেই জলজ্যান্ত ভূতের একমাত্র সহধার্মিনী ।