সেদিন যখন ঘর পালাল প্রিয়তা
কবি তখন শীতল কক্ষের শোকসভার
আরাম কেদারায় দুলছে।
দরজার বাইরে তখনো শ্রাবণের দুপুরের ভ্যাপসা আগুন
রক্তের গন্ধ, লাশের মিছিল আর অন্নের অনশন
রাজপথে অবিরাম জ্বলন্ত দাবানলের বিষ্ফরিত চিৎকার।


কে জানতো,
ঘর ছাড়া প্রিয়তা তার প্রিয় কবিকে ভেজাবে
ভাবহীন-লেশহীন কামুক বৃষ্টিতে।
সেদিন, বৃষ্টিও সাথে সাথে ঘর পালিয়েছিলো
জন্মভূমি ছেড়ে নেমে এসেছিল প্রিয়তা
আর তার প্রিয় কবির শরীরে।
যেন অমোঘ ঘুমের ঘ্রাণকে ম্লান করে
জাগিয়ে তুলেছিলো দুজনকেই।
ঠোঁটে ঠোঁটে লালার স্বাদে বৃষ্টি যেন
এক চিমটে লবণ! আরো সুস্বাদু চুমু।
সেদিন ঘর ছেড়েছিল প্রিয়তা।


আর কবি?
কবিও বৃষ্টিবতীর বুকে মাথা রেখে
ঝড়িয়েছিল ক’ফোঁটা চোখের জল।
বৃষ্টিবতী মেয়ে কবিকে জাপটে ধরে বলেছিল
কবি, আমার কোন গল্প নেই।
তোর সমুদ্রই আমার। তোর ব্যথার নীল
আমি রাঙ্গাবো গোলাপি রঙ্গে।


দিনভড় বৃষ্টিবতীর বুকে মাথা রেখেই
কবির সূর্য অস্ত গেল।
নিয়ন আলোর শান্ত ঝিল পেরিয়ে
প্রথম প্রহরেই ঘরে ফিরলো প্রিয়তা
পড়ে রইলো বৃষ্টির স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ।
শুধু ঘরে ফেরা হলো না কবি আর কবিতার।


তখন অনশন-অবস্থান আর আন্দোলনের
রাস্তাটিও শান্ত নদী।
পাল তোলা রিকশায় ঘরে ফিরছে প্রিয়তারা।
একটা রক্ত রঙ্গা চুমু জড়িয়ে পায়ে হাঁটা
পথে পড়ে রইলো কবি
আর তার দৃশ্যমান সমুদ্রের নীরব চিৎকার
ফিরে এসো বৃষ্টিবতী!!
ফিরে এসো প্রিয়তা।