" বাংলা নববর্ষ"


রচনায়: প্রফেসর ড. মোস্তফা দুলাল
পিএইচ.ডি. (ঢা. বি.)


সম্রাজ্যের জমির খাজনা হালনাগাদ আদায়ের সুবিধার্থে
দিল্লীর সম্রাট আকবর,
ফসলী সনের (বাংলা সাল) প্রবর্তন করেন হিজরি সনের পরিবর্তে
আজও হিসাব বেশ সুন্দর।
প্রতিটি বছর ১লা বৈশাখে বাংলাদেশের লোক ও জন
সবাই সকলে মিলে,
উচ্ছ্বাস উৎসবে মেতে ওঠে সব ধর্ম ও বর্ণের জনগণ
সকল ভেদাভেদ ভুলে।
ধর্ম বর্ণ জাত উপজাত যার যার পহেলা বৈশাখ সবার
এ মন্ত্র থাকে মাথায়,
কাঁধে কাঁধ মিলায় আসছে বছরের শুভ কামনা আবার
মঙ্গলের শোভা যাত্রায়।
পহেলা বৈশাখ যেন বাঙালির কৃষ্টি এবং সংস্কৃতির
বাহিরে প্রকাশ ঘটায়,
নতুন জামা গায় ঝেড়ে ফেলে খোল পুরানো সকল স্মৃতির
স্বজনের বাসায় বেড়ায়।
বিভিন্ন বর্ণের মুখোশে সজ্জিত উড়ায় ফানুস ও বেলুন
চলেছে বলি খেলা,
পহেলা বৈশাখ চিত্ত ও চিন্তায় সবার এক আত্মা এক মন
যা মনের মিলন মেলা।
ধর্ম ও বর্ণের কারণে আবৃত সব ভিন্ন ভিন্ন খোলে
বঙ্গ জননীর সন্তান,
১লা বৈশাখে সবাই এক সুরে গায় এক পতাকা তলে
এটাই তার আসল প্রমান।
পহেলা বৈশাখ মানে ঈশা খাঁর সোনারগাঁওয়ে বউ মেলা
পুতুল ও সার্কাস খেলা,
বর্ষ বরণে সমবেত গান হালখাতা নাগর দোলা
মনোহর চড়ক খেলা।
চলমান বাংলার ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির নানান ঢঙে
মাতে যে বাঙালিরা,
বৈসুক সাংগ্রাই ও বিজু মিল মিশে এক হয় বৈসাবী রঙ্গে
উচ্ছ্বাসে পাহাড়িরা।
বাঙ্গালীর সত্ত্বা অস্তিত্ব কৌশলে কেড়ে তো নিয়েছিল
ঐ হানাদার পাকিস্তান,
বঙ্গবন্ধুর উৎসাহে স্বীয় জাতি সত্ত্বার দীপ জ্বেলেছিল
বর্ষ বরণ অনুষ্ঠান।
তুমি কে আমি কে পরিচয় কি মোরা বাঙালি বাঙালি
বঙ্গবন্ধুর সেই স্লোগান,
ধর্ম বর্ণ ও জাত নির্বিশেষে ১লা বৈশাখে বাঙালি
গায়ে অস্তিত্বের জয়গান।
এক সুতায় গাঁথা সকল বাঙালি একটি বকুলের মালা
যেন সকলে স্বজন,
একই মাটিতে জন্ম আমাদের এক ভাষায় কথা বলা
সকল বাঙালি রতন।