ফেলে আসা দিন কত যে রঙীন
বেদনা  - মধুর হয় ,
পিছু পিছু ডাকে,স্মৃতিগুলো ভাসে
অতীত বাঁচিয়া রয় ।


ভালবাসি  মেঘ-সাদা কাশফুল
আঁকাবাঁকা মেটো পথ
বারে বারে টানে-রাখালীয়া গানে
বহে জীবনের রথ !


ঝর ঝর ঝরে - বালুভরা চরে
বিষন্ন দুপুর রোদ
কৃষাণেরা আজ কোথা গেছে চলে
বিরান রয়েছে যোত ।


চলে রাতভর ডাহুকের ডাক
কোরাদের ডুপ ডুপ
বদলেছে আজ সেদিনের বেলা
রঙ , রস যত রুপ !!


ওপাড়ার দাদী- নাম শাহজাদী
নাম যশে রাখে কুল-
বতুয়া শাকের  পেলকা রাঁধিতে
হতো না তাহার ভুল ।


এ পাড়া থেকে ওপাড়া চষিত
দইয়া মামুর মা'ও
শুকুরের মা'র মরিয়াছে পুত
কেউ কি দিয়েছে সাঁও ?


ঝুমুরের বাপেরে কাটিছে সাপে
কে  দিছে ধুলিপড়া ?
দখিন টারীর সখিনার মা'র
বেশ নাকী গলা চরা !


কত যে কথার খই ফুটে মুখে
চিবাতো পানের রাশ
খুক খুক খুক কাশিতো বুড়ি
দিন থেকে বার মাস ।


মাইলের পাড়ে ভূত আছে নাকী
শেওড়া তলায় দ্যাও,
তেপথির মোড়ে আলো -আঁধারে
বনে যেত তারা ম্যাও !!


কত যে কেচ্ছা কাহিনী ছড়িতো
এর  ওর মুখ দিয়া
কাঁপিয়া উঠিত কঁচি দেহখানী
চমকে উঠিত হিয়া ।


হায় বেচারী কালো বিড়ালী-
চোখ তার টানা টানা
ভূতের লাগিয়া কিল খায় রোজ
জান বুঝি ফানা ফানা !!


দেল্লির কুড়া বাহো হবে আজ
সারা গাঁয়ে পড়ে রব
উপেনের মা পথ চেয়ে কাদে
হারিয়েছে তার সব ।
এই তো সেদিনও তিস্তার জলে
ধরিল উপেন মাছ-
কোন সে ঢেউয়ে টানিল বাছাধনে
মা'র চোখে জল আজ  ।


এপাড় হইতে ওপাড় ধরিয়া
খুঁজে ফিরে মাতা রোজ
পেটের ক্ষুধা পিঠে এসে ঠেকে
দূরে থাক ভুড়ি ভোজ ।


আজো মনে  পড়ে পল্লি মায়ের
সাজানো যত কথা
জীবন নদীতে ভাঁটি বেলা আজ
ঢেউ মরে হয় সোঁতা ।


আজো মনে পড়ে সকোঁয়ার জলে
খেলিতো মাছের ঝাঁক
স্মৃতি কভু মরে ?  হৃদয়ের ঘরে -
এভাবে বাঁচিয়া থাক ।।


************ : কবিতার কিছু শব্দার্থ :
মাইলের পাড় = রাস্তার ধারের মাইল ফলক, যোত = জমি / ক্ষেত , পেলকা = লালমণির হাট অঞ্চলের নানা রকমের শাক-সবজি মিশ্রনে তৈরি একটি তরকারী বিশেষ , দেল্লিকুড়া = একটি বড় জলাশায় বিশেষ , তেপথি = তিনটি পথ যেখানে একসাথে মিলিত হয়েছে , সকোঁয়া= একটি ছোট নদীর নাম , ম্যাও = বিড়াল ।