দৃশ্যপট একঃ
---------------
একটি সাজানো বাগান
               কোন গাছেই ফুল ফুটে না,
অজান্তেই পাতা ঝরে…..
              ঝরে আর ঝরে......
একটি পাখি আসে
             ছায়া খুঁজে….
রৌদ্র-স্নান শেষে পালক ঝরিয়ে  
                 অস্তিত্বের চিহ্ন রেখে উড়ে যায়….
হাওয়ারা মধু-ক্ষরা স্বরে ও স্পর্শহীন-ছন্দে নাচতে নাচতে
আকাশে তোলে নীলকান্তি-ঝড়,  
                            মানুষ বাঁচে ভুলের ভীড়ে...
নগ্ন-পাথরও নিজেকে ঢেকে রাখতে চায়;  
              ভিতরের পোষা আগুন পালিয়ে যাবার পথ খুঁজে
                              কিন্তু কালের ঘর্ষণে সে ভেঙে চুরমার হয়ে পড়ে……
আঁধার গিলে খায় সেতারের সুর,
হাসি, কান্না, অভিমান ভেসে ভেসে ওঠে ছায়াছবিতে...
দেহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশের পথ ফিরে পায় শপথ ভাঙার মুহূর্ত
জমানো শব্দরা বিদ্ধ করে রক্ত-চন্দনের মতো হৃদয়ে
ভীষণভাবে, স্বর্গচ্যুত হাহাকারে...
                                        শেষে খুন হয় মাধবী-লতা,  
পাহাড় ডিঙিয়ে বজ্র-বিদ্যুৎ চুম্বনেরা প্রণতি জানায়
রক্ত-ঝরা ওষ্ঠে, বাহুতে, চতুর চোখের পলকহীন পাতায়;
সাধ্যাতীত ভালোবাসায় সৃষ্টি বুঝেনা স্রষ্টার রহস্য-জ্ঞান............
                                                  এ কী!
                         কে ? কে ওখানে? কি চাও?
আমরা মৃত্যু!
শবযাত্রার মিছিলে যুক্ত করে দেই জীবনের নাম
নিয়ে এসেছি কোটি কোটি মৃত্যু;ভালোবাসার মৃত্যু,বিবেকের মৃত্যু,আরও……
শোনে বড্ড হাসি পায়!
                             জানো না?
অসংখ্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেই
অতল খাদের ভেতর হতে জন্মকে টেনে আনে অর্চিষ্মান স্বপ্ন-রা
নিঃশব্দে,সেবিকার মতো….
শিশিরের টলটল স্বচ্ছতায় হাসতে শেখে আদিকালের শুকিয়ে যাওয়া ঘাস,
সূর্যের কাছে ছায়াঘন- অন্ধকারে অনন্তকাল আলো এনে দেয়ার শপথ শুনে
জন্ম ফিরে চলে তাঁর প্রাণদাত্রীর কাছে,
                                           নিশ্চিন্তে,আশ্রয়ের আশ্বাসে…..


দৃশ্যপট দুইঃ
-------------
টুকরো টুকরো ভাঙা কাঁচ,
ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কাঁচা বারান্দায়
দরজা খুলে হাঁটতে যেও না, অন্তরে ফিরে যাও.........  
নইলে ভীষণ রক্তপাত হবে!


দৃশ্যপট তিনঃ
-------------
ভয় ভয় মহাভয়!
কাগজের ছেঁড়া পাতায় লেখা আছে ছদ্মবেশীর নাম,
বাতাস উড়িয়ে নেয় যদি!
শব্দরা প্রত্যাখ্যানের পাশে জড়ো হবে...
ভয় ভয় মহাভয় !
বর্ণের পীঠেই জন্মদিনের মঞ্চ
নাচতে জানে না, তালি বাজায় মহাকাল...
আগুন-বুকে খসে পড়ে মহাশ্বেতার অশ্রু-জল;
ভয় ভয় মহাভয়!


দৃশ্যপটের সমাপ্তিঃ
-------------------
অস্তিত্বের লড়াইয়ে মুক্তি নামক বস্তুটি ঘিরে ধরে
সাড়ে তিন-হাত ভূমির পাশে
বদলিয়ে ফেলে দখলী স্বত্ব;
পড়ে থাকে কাঁটা-ঘেরা ঝোপঝাড়, দু’একটি বনফুল  
উন্মাদ যন্ত্রণাগুলো দুঃখের প্রতিমা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়
একাকী ,নিঃশব্দে......  
শূন্যতার কাছে পরাজিত অভিমানী প্রেমও
গুটিয়ে নেয় বড্ড অনিচ্ছায়...