প্রিয় সুজাতা,
                  ভালো অাছো তো?
এক জন্মে হৃদয়ের সব ঋণ মেটাতে পারে না কোন জীবন,
        বরং শেষ যুদ্ধের পর মৃত্যুর পরিপূর্ণ স্বাদ পাওয়াটাই
                  আসলে হৃদয়ের জন্য হবে সবচেয়ে বড় পুরুষ্কার।


সুজাতা!
মুক্তো কুড়াতে গিয়ে সাবধানে পা ফেলিও জীবন সমুদ্রে;
        নচেৎ ভেঙে যাবে রাক্ষুসী মাছেদের ঘুম,
                   হাঙরও পাবে রক্তের ঘ্রাণ!
                          আর গলায় পেঁচিয়ে ধরবে কালো অক্টোপাস।


ও অামার সুজাতা!
                   জেলের ভেতর আমার বারোটি বছর....


প্রতি সোমবার-
                  তুমি যখন আমায় দেখতে আসতে;
তখন বন্দিশিবিরে কাটানো-
                      বাকি ছয়টি নিশুতি রাত
আমার কাছে ছিলো
                        ঠিক বৃত্তপথে ঘূর্ণায়মান পেন্সিলের মত।
কেন্দ্রে রেখেছিলাম তোমারই কাজলমাখা দু'টি চোখ....


সুজাতা!          
                দেয়ালে গাঁথা প্রতিটি ইট জানে
ফোঁসকা পড়া হাতের গোপন ব্যথা!
                   পাকস্থলিও সয়ে গেছে-
                               পঁচা-ডাল আর শুকনো রুটিতে......


ও আমার সুজাতা!
                সকালবেলা দাঁড়ি কামাতে কামাতে
ভোতা ব্লেডের আঘাতে-
                        দু'টি গাল যখন হতো ক্ষত-বিক্ষত;
ঠিক তখন তোমার রেখে যাওয়া--
             চায়ের কাপের কথা কেবলই মনে পড়ে যায়….

জানো সুজাতা?
               তোমার উপহার দেয়া সেই সন্তানটি;
অাজ হয়তো একজোড়া সাদা পায়রাকে ডেকে বলছে----
এই বাবাকে দেখেছিস?এই বাবাকে দেখেছিস?
পৌঁছে দিবিনা বাবার কাছে
                               আমার হাজারো না বলা অভিমান!


আর মাত্র আটটি বছর...
তারপর.....?


কাশবন আর চলনবিলের উপর দিয়ে
           আমি মুক্ত পাখির মত
                                   ডানা মেলে উড়ে উড়ে চলে যাব
এক প্রতীক্ষারত সঙ্গহীনার
                              দু'ফোটা চোখের জল মুছে দিতে...


ভালো থেকো সুজাতা...
                             ইতি,
                                    ইথার।