শেষ সূর্যের মতো এখনো বেঁচে আছে আমার অসমাপ্ত বেদনা...
আর একদিন...
               এই পৃথিবীর পথে-পথে
অগণিত মানুষের ছায়াদের সাথে হয়েছিল
                                  আমার অালোকিত সাক্ষাত!
আমি তখন শুধুই দেখেছি এক ভয়ানক কালোচিহ্ন!


অাজ আমি ভালো নেই,
হাঁটু মুড়ে বসে আছি প্রশ্নবোধক(?) চিহ্নের উপর
এদিকে যন্ত্রণাদগ্ধ বেদনাগুলো তারা হয়ে ফুটছে মরমী আকাশে।


সত্যি----
অাজ আমি ভালো নেই,
কেননা দুর্নীতিপরায়ণ কিছু লোভার্ত মানুষের জন্য,
বহুআগেই ফাটল ধরে দু'ভাগ হয়েছে------
                     তোমাদের বেঁচে থাকার শক্ত মাটি।


অার সেই ফাটলের মাঝে বয়ে চলে এক অশান্ত নদী,
জাগে শুকনো চর মাইলের পর মাইল.....
দেখি, অদ্ভুত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে ,
                       ভঙ্গুর মনুষ্যসমাজ--------


তাদের পা'গুলো শূন্যের দিকে তোলা,
                         মাথাটি নিচের দিকে ঠাসা!


সত্যি----
অাজ আমি ভালো নেই,
                 ভালো থাকা আমার জন্য নয়...


নিঝুম সৈকত কিংবা জনশূন্য মাঠে
                               কালো-চাবুকে জর্জরিত হয়ে
বীর্যবান পুরুষের ছোঁয়ায় বীর্যবতী হলো নারী,
                                       কাঁদে সদ্য বাসরের বিধবা।


নষ্ট উল্লাসে বাজারে-বাজারে,নগরে-নগরে কিংবা
                        মধ্যরাতের নিরিবিলি পিচঢালা রাস্তায় ছিটানো হয় হেমলক বিষ,
                এরপর...  
রঙিন টেলিভিশনের পর্দায়
           নারী হয়ে যায় এক একটি চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন!


আজ স্বাধীনতা নেই মানুষের অন্তরে...
      সুখ-শান্তি পালিয়ে গেছে দৃষ্টি-সীমানার বাইরে...


আজ পুঁজিবাদী দালাল-শোষকদের চালিত
                              ভয়ানক গাড়ির চাকায় পিষ্ঠ হয়ে
সূর্যের অস্তাচলের দিকে নীরবে তাকিয়ে
                বাস্তুহারা বেকার যুবকের ঘটে অনিচ্ছায় আত্মাহূতি।


ওদিকে সোনার কাপে চুমু দিয়ে
                         গণতন্ত্রের পাঠশালায়
ভুল অঙ্ক কষে
                   বানরের মত লেজ নাড়ায় দুর্নীর্তিবাজ!


ইট-পাথরের দেয়ালে বন্দি
               স্ব- প্রকাশিত সুশীল বাবুরা
হাতে তুড়ি বাজিয়ে বলে-
    বাহ! বাহ্!বাহ্!
            চলছে এই ত বেশ!
                                তবে আরো চলুক!


আজ অধোয়া কালিতে দলিলের পাতায় নিভৃতে কাঁদে,
                       পদ্মাসেতু কিংবা তিস্তা পানিবন্টন চুক্তি।


থাপ্পরে-থাপ্পরে ভেঙ্গে যায় সংসদের টেবিল!
জলছবিতে ভেসে উঠে-
                       ঋণখেলাপীর রোমশ হাত!


আজ বিভক্ত হলো অামার পৃথিবী,
                বিভক্ত হলো দুখী বাংলা...
গড়ে উঠে লাল-প্রাচীর
           সীমান্তের কাঁটাতারের ফাঁদে
                        পড়ে থাকে অভাগী ফেলানীর লাশ!
রক্তের ধুলো উড়ে যায়-
                দূর...দূর...
                         নক্ষত্রালোকে...


একবিংশ শতাব্দী যেন মাঘের আকাশ!
                          নেমে আসে শুধু কালো অন্ধকার ।


ভাটির দেশের এই সমতল পলিমাটি-
                থরথর কাঁপে বিষাক্ত কালো পদচিহ্নে!


এদিকে মুষ্টিবদ্ধ রাইফেল হাতে আমি এক আহত যোদ্ধা!


হে ঈশ্বর!
আমাকে আবার মায়ের গর্ভে পাঠিয়ে দাও!


অাসলে,কতটুকু জল থাকলে সমুদ্র তৈরি হয়?
                 কতটুকু হেঁটে গেলে পথ তৈরি হয়?
জানা নেই---
সময়ের করাঘাতে নিয়তির বশ্যতা স্বীকার করে
অামার ঘরের একমুঠো চাল যেন বাসি ভাতে পরিণত হচ্ছে!


হে অনিরুদ্ধ!
                 সব জরা-ব্যাধি দূর করে দিয়ে
ভুল সময়কে পিছনে ফেলে রেখে;
                  আরেকটিবার তোমাদের জন্য
এক চুমুক তৃষ্ণার জল নিয়ে আসতে;
                 মায়াভরা পথে হেঁটে-হেঁটে চলে যাবো,
অামার বাংলা মায়ের পদতলে...


হে সুজিত!


ঘৃণিত ইতিহাসের কলঙ্ক মুছে দিয়ে
দুখিনী বাংলা মায়ের কোলে
       কোন এক অনাথ শিশুটিকে ঘুম পাড়িয়ে,
আরেকটিবার তোমাদের জন্য
এই অতলান্তিক অন্ধকারে
              এক পৃথিবী আলো নিয়ে আসতে;
লাল -রঙা সূর্যটাকে কম্পিত আঙ্গুলে ছুঁয়ে দিয়ে
                   মাথা তোলে দাঁড়িয়ে যাব
একটি পতাকার ভালোবাসায়......


হে কল্লোল!
             আমি এক রোমাঞ্চিত প্রেমিক!
তাই জ্যোৎস্নাপ্লাবিত বুক থেকে নিয়ে আসি চাঁদের আলো;
কিংবা হৃদয়কে ফালা-ফালা করে বের করে আনি শুভ্র আলো;
সেই আলোদের নিয়ে নীরবে-নীরবে  সাজিয়ে দেই
                                     আমার কবিতার অন্দরমহল!


শুনে নাও তবে কান পেতে!
               পুনরায় আমার কবিতা জন্ম নেবে
এই মহাকালের ভেতর....


জেনো,স্মৃতির সুবর্ণরেখা  মিশে যাবে সোনালী রোদ্দুরে।
একজোড়া বাদামী পায়রা উড়ে এসে বসবে,
                           রক্তে লেখা শেষ চিঠির উপর।


এই মায়াবী পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশে কিছু না বলা কথা,
হয়তো থেকে যাবে দৃশ্যের আড়াল।
কিছু অনুভূতি চুপসে যাবে,তোমাদেরই অজান্তে।


যদি কোনদিন আমার জিহ্বায় উচ্চারিত
মর্মভেদী শব্দগুলো ফুল হয়ে ঝরে পড়ে,
তবে ভালোবেসে কুড়িয়ে নিও...একা...একা...


আর আমার সৃষ্টিকে ঘিরে বাঁধা পড়ে ছিল
                           যত পাঠকের পিপাসিত মন,
তাদেরকে ঘোষণা করে যাই আমি মৃত্যুঞ্জয়ী...