দ্বীপাঞ্জন কে ভালোবেসেছিলাম কিনা জানিনা,
তবে "দ্বীপাঞ্জন" নামটা শুনলে একটাবার পিছু ফিরে তাঁকাই,
আজও!


যারা শূন্য জীবনে এসে ঘাঁটি গাড়ে,
তারপর ঠিক পূর্ণতা প্রাপ্তির মুহূর্তে আবার সবকিছু শূন্য করে দিয়ে চলে যায়,
দ্বীপ তাদের মধ্যে একজন।


বসন্তের দিনে পড়ন্ত রোদের মায়ায় যখন বেলা পড়ে যেত,
সেই জলপাই রঙা বিকেলে খোলা ছাদে বসে
সে আমাকে শোনাতো সাম্যবাদের গান।
লেলিন থেকে কাল মার্কস।
আর পুজিবাদের ললুপ আগ্রাসনের আকাশ ছোঁয়া গল্প।


অথচ সে ছিল ভীষন রকমের সাম্রাজ্যবাদী।
তার দিগজয়ী আক্রমণে ক্ষত বিক্ষত হয়েছি
বারবার।
তবু তার স্বৈরাচারী অধিকার বোধে ক্লান্তি আসেনি কখনও ।


কেমন যেন একটা পাহাড়ি ঝড়ের মতো ছিল সে।
মেঘহীন বেনামী রাতের আকাশে ওর হাত ধরেই
প্রথম দেখেছিলাম
ক্রমশ ভোঁতা হয়ে যাওয়া সপ্তমীর চাঁদ।


অথচ দ্বীপের চোখ দুটো ছিল ভীষণ রকমের ধাঁরালো।
উপনিবেশ গড়ার খেলায়
দৃষ্টিই ছিল তার মোক্ষম অস্ত্র।
সেই মারণাস্ত্রে ঘায়েল হয়েছি কতবার।
অথচ সে তো উপনিবেশ গড়েনি!
ফালা ফালা হয়ে চিরে শত ছিন্ন হয়েছে হৃৎপিন্ড,
তবু কোথাও কালশিটে পড়েনি তো!


এই তো দিব্যি আছি ......ভীষন রকমের স্বাধীন......!


কোনো এক নির্জন ভোরে,
আমরা হাটছিলাম একটা কুয়াশাঘন রাস্তায়।
কুয়াশার ডানা কেটে এগিয়ে চলছিলাম সামনের দিকে,
ক্ষণে ক্ষণে পেছনে ফেলে কুয়াশাময় কিছু পথ।


দ্বীপ বলেছিল,
"এই যে রাস্তাটা দেখছিস,
এটা একদম আমাদের জীবনের মতো।
এই রাস্তার মতোই আমাদের অতীত আর ভবিষ্যত্
নিবিড় কুয়াশায় আচ্ছন্ন।
দৃশ্যমান শুধুই সামনের আগামী পথটুকু,
জীবনের তাগিদেই যে পথে চলতে থাকে জীবন ।


আজও
মেঘহীন ওই নীলচে আকাশের একফালি
চাঁদটায়
অথবা নিরব তারাগুলোর মাঝে প্রতিদিন
আমার দ্বীপ কে খুঁজি।
কখনও পাহাড়ি হওয়ায় ,
সাম্যবাদের স্লোগানে, ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদের ইতিহাসে।


তবে যা দেখতে পাই,
তা শুধুই একরাশ ঘন কালো কুয়াশা।