শক্ত করুণ মেঘ রুদ্দোর মাটি ফাটা ক্ষেত,
এক অস্পষ্ট ঝিমুনিতে করে গা শিরশির,
             ভূমাতার চিকণ চিড় ধরে উড়ে যায়
             অস্পষ্ট না দেখা ধোঁয়া ; করুণ নাভিশ্বাস।
মধ্যগগণে সূর্যের আক্রোশে, বালিভূমির বেলা
ছটফট করে উঠা হতভাগা কুকুর, দরদর করে শুকনো পুকুর,
            এক ছটাক মায়া রৌদ্র, তার দীপাবলি মিতা তালে
            সহ্যের অসীম সীমাতে মিছে লুকোচুরি যায় খেলে।
চৈত্র সংক্রান্তিতে কিঞ্চিৎ কার্পণ্য , করিনি তো রাখ ডাক
৩৬৫ দিনের লটারি ঘুড়ে, এসো হে নব বৈশাখ।।
                    
                    ঝলসে যাওয়া নির্লিপ্ত আনন্দ,
শত ক্রন্দনের আর্ত চিৎকার, বেবাক মুছে ফেলে নির্বাক।
সব শেষটার হয়ে যাক; এক সংজ্ঞাহীন শুরু
            তবু শেষটায়,তেষ্টায় ছাতি ফাটে দুরু দুরু।
রাঙা বিচিত্রার ক্ষণিকা ঝটিকায়, ছুঁয়ে যায়
এক অযত্নে মোড়ানো তুলিকা; হালকা আঁচড়ে,
           তপ্ত মাটিতে আসে তীব্র হরষ বুনি,
           মৃত্যু হোক বিষাদের, এসো সবে মিলে হই খুনি।


নতুন বছর, নতুন গাছে, এসে জড়াই
নতুনের চাদর মোড়ানো ; স্বপ্নাতুর পাতা
          ভুলগুলো যাও ভুলে, ইশারাটুকু নাও তুলে
          প্রতি অধ্যায়ে উন্মোচিত- হড়িত হালখাতা।
পদ্মার ঘোলাটে ধূসরের গভীর সন্তানেরা;
রূপালি মায়ার করতালিতে, নিয়ে যাও
         নতুনত্ব; গায়ে উল্কির রঙে রাঙো, শোভাযাত্রা
         কেন যেন সবকিছু ভেঙে, গড়ে ফেলি নবমাত্রা।
পুরনো বাধাটুকু আজো যদি থাকে ঠায়,
তবে শক্ত হাতে তোল অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি
         কালবোশেখির অন্তিম তেজ দেখে হই ক্ষিপ্ত
         অমিত তেজে বিপদ দেখে দাও- অবজ্ঞা হাসি।।


সব সনাতন মুছে যাক, আসুক নব্যের মেলা,
সনাতন প্রীতি, সনাতন রীতি, তবু করোনা কো হেলা।


সাদামাটা মাটিতে নরম আঙুল শক্ত করে,
আদুরে স্পর্শে ছুঁয়ে দাও , সনাতনকে ভিন্ন রূপ দাও।
          এসো হে বৈশাখ, এসো নিষ্প্রাণে দাও প্রাণ
          দূর করে দাও ম্লাণ,
          আকাশে বাতাসে ভাসুক, বৈশাখি নবঘ্রাণ।।