এক মুঠো শিউলী গুঁজে রেখেছি তোমার পাটভাঙা শাড়ির ভাঁজে...
বিছানাতে আলগোছে সাজিয়ে রেখেছো,
এখনি বুঝি কাক ডুব সেরে জড়িয়ে নেবে গায়ে।
আমি অপেক্ষার প্রহর গুনে চলেছি...
সারাদিনমান এ কাজ সে কাজ,
শত কাজের বাহানায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছো সারা ঘরময়।
সবটুকুই কি কাজের খাতিরে?
নাকি নিছকই আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া
ঐ ফুলের ঘ্রাণ নিতেও আজ ঘৃণা বোধ কর তুমি!
একদিন যে নৈবেদ্যের আশায় কাটিয়ে দিতে বিনিদ্র রজনী
আজ একটুখানি দৃষ্টি দিতেও এতটা তীব্র দহন?
অপরাধের ভারি বোধে জবুথবু আমি
কুঁকড়ে থাকি সীমাহীন দ্বিধায়... অপরিমেয় লজ্জায়।
সেই সঙ্কোচের পাহাড় ডিঙিয়ে প্রকাশিত হয় না আমার সাহসী উচ্চারণ,
বলিষ্ঠ দীপ্যমান পৌরুষ!
মুখ ফিরিয়ে সরে যাও তুমি...
শুকোতে না পারা ক্ষতের দাহে আজো দগ্ধ তোমার কমনীয় নারীত্ব,
আমার লজ্জা তাতে ছড়িয়ে দেয় উদগিরিত লাভা।
কত শত ব্যস্ততায় গা এলিয়ে পড়ে থাকে অবহেলিত শিউলী!
ভাঁজের অবগুণ্ঠন খুলে জড়াতে পারে না তারা
চম্পককলির মতো ঐ দু’খানা কোমল করিডোরে।
আমিও চকিতে চোরা দৃষ্টি ফেরাতে ফেরাতে ভাবি
কতদিন হারাই না সেই কামনার বাহুপাশে!
ভালোবাসায় জড়াজড়ি দিনগুলোতে
আকণ্ঠ ডুব দিয়েও আজ চাতকের মতোই পিপাসার্ত আমি...
আরেকটি বার নজরবন্দি হতে ইচ্ছে করে
কোনো এক মায়াবতীর কোমল আঙ্গিনায়।
একদা সেইখানে বসত ছিল আমার;
ইঞ্চি ইঞ্চি জমি চষে বুনে দিয়েছি বীজ, উত্তপ্ত ভালোবাসার।
এতটুকুও জবর দখলের আশঙ্কা ছিল না কোথাও;
অথচ আজ...
চারপাশের আবাদী প্রান্তর ধু ধু ফাঁকা পড়ে থাকে
সেখানে হয় না কোনো জলসিঞ্চন, নতুন কোনো ফসলের আবাদ।
হৃদয়ের ষোল আনা চর বিকিয়ে দিয়েছি অনাহুত দখলদারের জোর তাণ্ডবের কাছে,
বাকি পড়ে আছে যে সামান্য কিছু অংশ
সেটুকুকে আজ লুকিয়ে রাখি পরম লজ্জায়; নিশ্ছিদ্র কুণ্ঠায়।
এই বুকে হেঁটেছে অন্য নারী...
এ ভূমি...আজ তোমার জন্য এতটুকুও নিরাপদ নয়।