যতই শুনি মধুর বানী কান পাতিয়া রই
সবাই যাবে স্বর্গপানে আমি যবো কই ?


পেটে পুরি চিড়ে মুড়ি বিন্নি ধানের খই
নুন আনতে পান্থা ফুরায় কি বলিব সই ?


চৈত্র মাসে শ্রাবণ আসে আখি ভরা জল
পেটের ক্ষুধায় চোখের পানি করে টলমল ।


ছাদ ছেদিয়া বৃষ্টির পানি পরে আমার ঘরে
হান্ডি পাতিল ছিল যাহা সবই নিল ঝড়ে ।


একলা ঘরে থাকি আমি পরান ধর পর করে
না জানি কি হয়ে গেল চুপসে থাকি ডরে ।


কত কথা ভাবি আমি থাকি উপবাস
হর হামেশা সারা নিশি জাগি বারো মাস ।


অনাহারি বলে আমায় কেউ না আদর করে
এত অনাথ হলাম আমি এই পৃথিবীর তরে ।


অল্প বয়সে গেলেন খসে আমার মাথার ছাদ
কি বলিব তোমায় আমি ওগো পাণ নাথ ।


গরীব বলে আমার কথা শুনবে না কেউ জানি
ক্ষুধার জ্বালায় হাত বাড়ালে শুধায় মধুর বানী ।


দিন দুপুরে নেয় যে কেড়ে ইজ্জত করে হানি
ইজ্জত যেন তাদের কাছে কচু পাতার পানি ।


মানবেতর কাটছে জীবন দেখার কেহ নেই
যার কাছে যাই সাহায্য চাই কেটে পরে সেই ।


বড় লোকের বড় মাথা আরো আছে ক্ষমতা
গরীব দুঃখির পানে তাদের নেই কোন মমতা ।


তেলের মাথায় তেল দেয় মিথ্যে বিচার করে
দুর্বল বলে কথার আগে গলা টিপে ধরে ।


যাকেই আমি কর্তা মানি স্বর্গে চলে যায় সে
আমি অনাথ অভাগিনি, আমার কথা বলবে কে ?


সারা জীবন দুঃখ আমায় সঙ্গ দিয়েছে
সাদ-আল্লাদ সব জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে ।


তবুও করি দেশকে আমার মন থেকে শ্মরণ
বাংলা মায়ের বুকে যেন হয় আমার মরণ ।


আমি ধন্য দেশের জন্য, দেশ করেছে যা করন
নিয়তিকে আপন করে সবই নিলাম করে বরন ।


এখন আমার বয়স হয়েছে চলার উপায় নাই
শেষ বয়সে আমি একটু সূখে মরতে চাই ।