কবিতার মান
                           - সরকার ফজলুল হক


দাদা বললেন, হ্যাঁরে ছলু
কবিতার মান দেখেছ কি যাঁচাই করে ?
ও মা,দাঁতে জিভ কেটে বললাম হুঁ ।
তারপর বাদুর ঝোলা হয়ে ছুটে গেলাম
হন্তদন্ত হয়ে বাংলা বাজারে ।
আমাকে দেখেই পাশের দোকানের ভুলু
বলে উঠলো,স্যার এবারে আপনি সেজে
গুজে এসেছেন,২১ এর বই মেলায় কবিতার
বই প্রকাশ করবেন বুঝি ? হাতে নতুন বই
নিয়ে লাইন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কবিগণ,
নিজ পরিচয় তুলে ধরে মিডিয়ার সামনে ।
এই যে দেখুন,কত শত কবির বই,পান্ডুলিপি
পড়ে আছে আমাদের গোডাউনে,পোকায় কাটছে
কবির মনে জমাট বাঁধা ভালবাসার ভুল গুলো ।
নজরুল,রবী ঠাকুর,জসীম উদ্দীন,আনন্দমোহন,
সুকুমার রায়,গোলাম মোস্তফা,সুফিয়া কামাল,
কালী প্রসন্ন ঘোষ,কাজী কাদের নেওয়াজ,মাহফুজুল্লাহ,
আহসান হাবীব,বন্দে আলী মিয়া,অতুল প্রসাদ সেন,
রজনীকান্ত সেন,শেখ ফজলল করিম,সামসুর রাহমান,
মাইকেল মধুসূদন,কুসুম কুমারী দাস,আল মাহমুদ,
নির্মলেন্দু গুণ আরও কত নামকরা কবি আছে,
এত সবের ভীরে আপনার কবিতা পাত্তাই পাবে না ।
তারপর বাদুর ঝোলা হয়ে
বাড়ি ফেরা ছাড়া আর উপায় কি?
বাড়ির উঠানে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই গিন্নী
চেঁচিয়ে বললো,আরে ঐ মিনসে তিন দিন গেলো,
চাল,ডাল,মরিচ-পিঁয়াজ,আদা-হলুদ আর বাচ্চার
খাবার এনেছো ? আমিও হেঁকে বললাম কেন ঐ
বকুলপুরের বাবুল মিয়ার দোকান থেকে খরচগুলো
আনতে পারিস না ?
বাকির খাতায় আমার নামটা লেখা আছে !
গিন্নী কোমরে শাড়ী গুঁজে বললো- ময়রা তোর
হিসেবে লিখে রেখেছে-“ছয় মাসের টাকা বাকি,
তোর মতন ‘কবি'র ’ কাঁথা পুড়ি !
বছরের শেষ তারিখ থেকে বাকি একদম বন্ধ”!!