বেনুবনের মাথার উপরে স্বপ্নচারিনী
যায় যে ভেসে জুৎস্নানদে ধবল পঙ্খী নায়ে
ডিঙিয়ে সকল বেদনাপদ্ম সন্ধ্যামালতীর ওপারে
হাসনাহেনা নিরবে উদ্বেল বুনোহাঁস তিতির আর
সারসের সুদূরে মেলবে ডানা চাঁদের ঝিলে।


ঘুম নালাগা বেশুমার তারার নরম আলোয় চান্নি পসর
এক হালকা-আলো রাতে শতফুল রাতে ফুটে রাতেই ঝরে।
আরেকটু উজল হলে এই বাতিঘরে প্রথম আলয়ে যায় যে
বেলা সাঁঝ-বেলাতে কুড়িবে কত হিজলমালা ঐ রাঙাপথে।


করবী কনকচাঁপা রক্তজবা কত চিত্রালী ফুলের পাঁচমিশালী
একমুঠ পাপড়ি আমি উড়িয়ে দিয়েছি দখিনা বাতাশে
কাশবনে পাখিদের কলতানে খরপরশা কদম্বতলে।
তুমি আসবে বলে এই পথে, নীরদের পাত্রে পান্থজনেরে
জলপান করার মানসে মাধবকুণ্ড ঝরনায় ধোয়া এক কলসি
নীহার নীর আমি ভাসিয়ে দিয়েছি, চিত্রা হরিণের সুন্দরবনে
তোমার চির চেনা পথে, ইরাবতির জলধি জলোচ্ছাসে।


লালা রোদ্দুরে রাঙিয়ে একখানা নবাববাড়ির সাচি পানখিলি
সময়ের তাপে যদি ঝরে যায়, সেও যদি এসে যায়
তাই ভেবে নিশিথীর কুসুমে রাখিছি জিয়ে আমি।
আহা রে সে যে এক চতুর রাঙ্গা অধরের মধুকথা, তা কি
ভুলা যায় সে কথা আজো আমি বলি বাতাসের কানে কানে।
জলতরঙে আঁকাবাঁকা নদীর বাঁকে বাঁকে বাঁশরির সুরে সুরে
প্রাণোচ্ছল ফুল্ল কণ্ঠে মাটির নুন টানা জাঁকাল সুরেলা
ভাটিয়ালী তানে, কোরা নিত্য নতুন শহুরে গানে গানে।


যার হাতে তুমি এক কড়ে বীণা তাঁরই কেশাগ্রে খেলে আলো আঁধারী
হলফ করে বলতে পারে যে শোন এবার ডাকে সেই তোমারি
অর্ক সখা দেখত নয়ন ভরা রঙিন স্বপনের বাংলাদেশ তুমি!