পূবের আকাশটা তখনও ভালো করে ফর্সা হয়নি,
দূরে পাখিরা সবে মাত্র বাসায় কিচিরমিচির শব্দ সুরু করেছে।
শিউলি ফুলগুলো তখনও ঘাসের উপর ঝরে পড়ার অপেক্ষায়,
এমনি মুহূর্তে মেঠো পথে শোনাযায় পদস্খলনের দুমদাম শব্দ।
কাউকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবার শব্দ যেন গগন বিদারী আর্ত চিৎকার,
শুভ্র পাথরের মতো স্থির কঠিন চোখ জোড়া দৃঢ় প্রত্যয়ে অনড়।
ক্রমশ ধরণী রৌদ্র প্রখর হয়ে ওঠে ছায়া হীন বৃক্ষ শাখার তল,
অন্ন গ্রহণ করি তিন বেলা কিন্তু কখনও ভাবিনা কার জন্যে এই ক্ষুধা মেটে!
কার জন্যে সভ্যতা এগিয়ে চলে কেউ কি দেখেছো চোখ মেলে?
পেশী বহুল তেজে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রাণকে বাঁচিয়ে রাখে কে?
সমাজে যাদের দাম নেই, মান নেই, দীন দরিদ্র তারাই যে- কৃষক।
কৃষকরা মাঠে অন্ন বোনে, এক চিলতে হাসি যে তাদের শুধুই সম্বল,
এদের পরিশ্রমের ফসল খেয়ে আমরা সবাই বেঁচে থাকি,
আমরা নিজেদের ভাবি সমাজের ধারক বাহক শোষক,
হয়তো আবার ভাবি আমাদের শক্তি, অর্থ, সম্মান বিশাল।
যখন এরা দু হাত গুটিয়ে নিয়ে সরে যাবে কর্ম থেকে,
সেদিন দেখো গুঁড়িয়ে যাবে বিশ্ব ভুবন এদের ক্ষমতার চোটে।
কোনো ভাবেই সেদিন তুমি পাড়বেনা আবার অন্য সভ্যতা গড়ে নিতে।
এরা থাকে নীচে কিন্তু যোগায় বিশ্ব গড়ার বল।
সকলের অলক্ষ্যে সাধের ভুবন গড়তে এরা খাটে অবিরল।
এরা কখনও পায় না মানবতার সঠিক মূল্যায়নের আঁচ,
এদের দু-চোখে শুধু ভাঙা স্বপ্ন আর শূন্য মরুভূমি ধূ ধূ।
এরা শ্রমের বিনিময়ে ফসল ফলিয়ে যদি ন্যায্য মূল্য না পায়!
তবে বলতে পারো কি করে আমরা এদের কাছে ডাল ভাত চাই?
তবুও এরা বাঁচার জন্য ও সমাজ কে বাঁচানোর তাড়নায় বেঁচে থাকে,
মাথায় ঋণের বোঝা ও দায়ের বোঝা নিয়ে জীবন বইতে থাকে বারোমাস।।