যেদিন ভূমিষ্ঠ হলাম প্রাণহীন এই পৃথিবীতে,
হয়েছিল সবাই নির্বাক- স্তম্ভিত আমায় দেখে!
মা তুমি ছিলে একমাত্র উদ্বেলিত আনন্দে চেয়ে,
সবাই হেউ ভাবে তাচ্ছিল্য করেছিল, - - - - মেয়ে.. !!
মেয়ে হয়ে জন্ম হলে নিয়তি তুমিও হয়তো এটা বলতে চাও,
আজ যে এক বাড়ির মেয়ে কাল সে অন্য ঘরের বউ।
মমতাময়ী মা যে আমার সব কিছুতেই তুমি ছিলে,
ধীরে ধীরে আমায় সুনিপুণ হাতে গড়ে ছিলে।
বাবা ছিল আমার প্রথম আদর্শ পুরুষ মুখ,
এটা যে পুরুষ তান্ত্রিক সমাজ ! নেই মেয়েদের সুখ।
মা দুঃখ কষ্টের আঁচড় থেকে রেখে ছিলে আঁচলে,
আমার খেলা পড়া বলার সকল সঙ্গী তুমিই ছিলে।
তোমার আদর্শ শিক্ষায় আমি বড় হলাম,
বিয়ের পর মা আমি তোমার সান্নিধ্য হারালাম।
তোমার গণ্ডি ছাড়িয়ে অন্যের গোত্রের গণ্ডিতে অনুপ্রবেশ,
এখানে তোমায় হারিয়ে হয়েছে অন্য সদস্যদের সমাবেশ।
এসেছে অনেক দ্বায়িত্ব, বর্তেছে বিভিন্ন সাংসারিক কর্তব্য,
সেবা শুশ্রূষা, মন যুগিয়ে চলা, তবুও নানান কটুক্তি মন্তব্য।
সারা দিন অক্লান্ত পরিশ্রম আর সকলের মুখে তুলে দিই অন্ন,
বাকি টুকু দিয়ে নিজের উদর হয়ত ভরে কিন্তু ভরেনা মন।
বহু বার চেষ্টা করেছি সব কিছু ঠিকঠাক মানিয়ে নিতে,
স্বামী ছাড়া খুব কঠিন অন্যদের ভরসা সহযোগিতা পেতে।
"মনে নেয়া আর মেনে নেয়া এক নয়",
আজ উপলব্ধি করছি রবি ঠাকুর যে বলেছিলেন সেটাই।
এখন শুধু লাঞ্ছনা গঞ্জনা নিয়ে মা তোমায় পরে মনে,
যখন আমি অশ্রু চোখে একা গিয়ে বসি ঘরের কোনে।
সারা দিনের কাজের ফাঁকে কেউ দেখেনা চেয়ে,
মা তুমি যে আছো আমার হৃদয় আকাশ ছেয়ে।
আমি কাকে জানাব মোর বুক ভরা কষ্ট আর যন্ত্রণা,
তোমার মত কে দেবে মায়া মমতায় ভরা শান্তনা।
এখানে তে আপন শুধু দুচোখের এই কান্না,
এরা কি মানুষ নাকি মানুষ রূপী হায়না!!