মহামান্য আদালত কবিকে যখন
দোষী ঘোষনা করলো,
কবি তখন বুকের মাঝে
অট্টহাসি হেসেছে নীরবে,
কবির কবিতারা নাকি
এখন মিছিলে যায় স্লোগানে স্লোগানে,
জনগন তাদের দাবীদাওয়ার কথা
বেমালুম ভুলে গেছে,
সবাই নাকি আরাম প্রিয় হয়ে গেছে,
শুধু কবির কবিতাগুলো
চরম বিপ্লবী হয়ে গেছে,
একটুও শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না রাষ্ট্রযন্ত্রকে
শ্রেনীশত্রু খতম করছে কবিতার অভিমানে,
তাই কবিকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হলো।


কবির মৃত্যুদন্ড হলো
আর কবিতা লিখতে না দেওয়া,
কবির সকল কিছু এখন
রাষ্ট্র্র অধিকারে চলে যাবে,
কবিতার খাতা,কলম,বসত ভিটা,
একটা ছোট্ট পুকুর আর তার পাশে দাড়ানো
লিকলিকে উদাসী নারিকেল গাছ।


তারপরও মহামান্য আদালত
কবিকে উলংগ করে দেখতে বললো,
কবিতা লেখার মতো আর কিছু
লুকিয়ে রাখেনিতো শরীরের গোপন জায়গায়
সাথে সাথে মহামান্য আদালতের
আদেশ পালনের জন্য একজন সিপাহী
তার হাতের বড় বড় নোঁখ দিয়ে
কবির শরীরের প্রতিটি লোমকুপ
আচঁড় দিয়ে দেখলো,
বড় বড় দাঁত দিয়ে
কামড় দিয়ে দেখলো,
কিছু না পেয়ে বললো,
“একটা বুকের খাঁচা ছাড়া
শরীরে আর কিছুই নেই”।
সিপাহী জানেনা এই বুকের খাঁচায়ই
লুকিয়ে রেখেছে কবি,
একটা আকাশ,নদী,পাহাড়,
মায়ের আদর, বাবার শাসন
কিছু অভিমান ,বিরহ ,ভালোবাসা,
একাকীত্ব,সব কিছু ,একেবারে সব।


মহামান্য আদালত তার রায়ে
আরো বললো,
“কবির মৃত্যুর পর তার কোনো
কবর হবেনা এই রাষ্ট্রে”।


কবি এবার অট্টহাসি দিয়ে
চিৎকার করে বলে,
“কবিদের মৃত্যু হয়না
কবরের জন্য মাটি দরকার হয়না,
কবির কবর হবে
প্রতিটি কবির বুকের জমিনে”
কবি হাসতে হাসতে আরো বললো
কবি  জানাজার কাপড় বুনবে
তার কবিতার শুদ্ধ অভিমানের সুতোয়,
কবির জানাজা হবে কবিতার
বিরহের আর অভিমানের
স্লোগানে স্লোগানে।
—————-
রশিদ হারুন
২৭/০১/২০১৮