আগোছালো যায় কোনো কোনো দিন।


আজ সকালে নামাজ পড়তে গিয়ে মসজিদেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম!
কতক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম জানি না,
শুভ্র দাড়িওয়ালা ইমাম সাহেব আমাকে
ঘুম থেকে ডেকে তুলে বলেছিলেন,
আপনার শরীর কি খারাপ?
ভালো আছি বলতে গিয়ে ভুল করে বলে ফেললাম,
‘কবিতার পঙক্তিটা যে কোথায় হারালাম,
শরীর মনের ভিতরে বাহিরে হাতড়েও পাচ্ছি না!
ইমাম সাহেবের অবাক দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে দ্রুত মসজিদ থেকে পালিয়ে বাঁচলাম।


ট্রাফিক সিগন্যালে লাল বাতির মাঝেই গাড়ি চালিয়ে
রাস্তার সবার সামনেই ট্রাফিক পুলিশের গালমন্দ শুনলাম।
কি বলব বুঝতে না পেরে বলে ফেললাম,
‘কবিতার পঙক্তিটা যে কোথায় হারালাম,
শরীর মনের ভিতরে বাহিরে হাতড়েও পাচ্ছি না!’
সেই ট্রাফিক পুলিশ প্রচণ্ড রেগে
সাথে সাথে ধরিয়ে দিলো বড় অঙ্কের জরিমানার রশিদ।
এবারও বোকার মতো হাসি দিয়ে কোনোমতে পালালাম।


বিকেলে কফি পার্লারে বসে  কফিতে  চুমুক দিতেই
কিভাবে যে কফি ছলকে সাদা শার্টে কফি রঙ ধরিয়ে  দিলো!
এক দশ বারো বছরের বালক হো হো করে হেসে বলো উঠল,
“ মা দেখ, লোকটা এত বয়সের, তবুও কফি খেতে শিখেনি”
এবারও আমি হঠাৎ বলে ফেললাম,
‘কবিতার পঙক্তিটা যে কোথায় হারালাম,
শরীর মনের ভিতরে বাহিরে হাতড়েও পাচ্ছি না!’
পিছন থেকে এক নারী কন্ঠের উপহাস শুনলাম,
‘এই শহরে আজকাল পাগলে ভরে গেছে,
বাচ্চাদের নিয়ে যে ঘুরতে বের হবো,
তারও উপায় নে‌ই!’
এবারও একরকম পালিয়ে আসলাম।


বাড়িতে ফিরে আয়নায় দেখি
সারাদিনের এত অপমান আর লজ্জায়
আমার চোখ নেশাখোরের মতো টকটকে লাল হয়ে আছে,
আর লাল চোখে শুয়ে আছে কবিতার পঙক্তিটা।
————————
র শি দ  হা রু ন
১৫/০১/২০২৩