শাহপরান হলের ৪৩৯/ডি রুমের
দেওয়ালের ঠিক এইখানে মাধুরী দীক্ষিতের
একটা ছবি ছিল।
আপনারা মাধুরীকে চিনলেন না!
বলিউডের এক সময়ের ধাক্ ধাক্ নায়িকা ছিল।
আমার হল জীবনের চার বছরই মাধুরীকে আমি আটকে রেখেছিলাম এই রুমেই,
কখনোই রুম থেকে বের হতে দেইনি তাকে  এক মুহূর্তের জন্য।
যখনই বিছানায় শুতে আসতাম
তখনই দেখতাম মাধুরী আমার দিকে মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,
তার ঠোঁটে ঝুলে আছে এক নেশাধরা বিষাক্ত হাসি!
আমাকে ঠিকমতো ঘুমাতে দিতোনা সেই বিষাক্ত হাসি।
বিশ্বাস করেন ঘুমে আমার চোখটা বন্ধ হতে শুরু করলেই
মাধুরীর সেই হাসির রিমঝিম শব্দে আমার প্রায়ই ঘুম ভেঙে যেত।


প্রায় আটাশ বছর পর শাহপরান হলের  ৪৩৯/ডি  রুমে এসে দেখলাম
ছবিটা এখন নেই দেওয়ালের সেই জায়গায়!
এখনো ভালোভাবে তাকালেই বুঝা যায় দেওয়ালের এই জায়গায় কিছু একটা ছিল কোন এক সময়।


এই রুমের দক্ষিণের জানালা বরাবর একটা ইউক্যালিপটাস গাছ ছিল।
সেটার ডালপালার মাঝে একটা
বেহায়ার মতো আমার জানালা ছুঁয়ে ছিল!
গভীর রাতে দিনের পর দিন অঘুমে
মাধুরীর জন্য আমার অভিমান, হাহাকার আর বিষণ্ণতা সবই ভাগাভাগি করতাম
সেই গাছটার সাথে, সেই বেহায়া ডালে হাত রেখে।
কিন্তু মাধুরীকে কখনো বুঝতেও দিতাম না
আমার সেই অভিমান, হাহাকার আর বিষণ্নতা,
তাইতো সে সবসময় হাসিমুখে মায়াজাল পেতে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল চার বছর ধরে-
খুব যত্নে রেখেছিলাম মাধুরীকে,
ধুলোবালি জমতে দেইনি কখনো সেই ছবির হাসিতে।


আমি কি আজ ভুল রুমে দাঁড়িয়ে?
ইউক্যালিপটাস গাছটা কি অন্য রুমের জানালা বরাবর?
রুমের চারজন বিশ একুশের যুবক আমার দিকে উৎসুক ভাবে তাকিয়ে!
প্রায় আটাশ বছর পর একই রুমে হঠাৎ করেই
মাধুরীর সেই নেশাধরা বিষাক্ত হাসি আবার আমার কানে ভেসে এল,
আর ঠিক তখনই বাতাসে ইউক্যালিপটাস গাছের পাতার ঝিরঝির শব্দে
আমি আমার হারিয়ে যাওয়া সব অভিমান, হাহাকার আর বিষণ্নতার গল্প শুনতে পেলাম।


হঠাৎ করেই বলে ফেললাম,
মাধুরী কোথায় গেল,
তোমার কি জানো?
এ‌ই জানালা বরাবর একটা ইউক্যালিপটাস গাছ ছিল,
ওটা কি মাধুরীর সাথে চলে গেছে
আমার বিশ একুশের সব অভিমান, হাহাকার আর বিষণ্নতা বুকে নিয়ে?


৪৩৯/ডি রুমের চার যুবকই একসাথে বলে উঠলো,
মাধুরী কে?
উত্তরে আমি অবলীলায় বলে ফেললাম,
‘আমার বিশ একুশের ধাক্ ধাক্ নায়িকা,
বন্ধু কামরুলকে নিয়েই একদিন আসতেই হবে মাধুরীকে খুঁজতে।
——————
র শি দ  হা রু ন