আজ সন্ধ্যাবেলার অসময়ের ঘুমে এক বেখাপ্পা স্বপ্নে বৃষ্টিতে ভিজলাম!
অথচ কী আশ্চর্য,
সেই স্বপ্নে আশেপাশের কারো শরীরেই বৃষ্টির একফোঁটা জলও স্পর্শ করেনি;
শুধু আমি ভিজে একাকার!


সবাই আমার দিকে কেমন অদ্ভুতভাবে তাকিয়েছিল।
রাস্তায় যাকে পাচ্ছিলাম তাকেই ডেকে
কেবলই একটা বাড়ির খোঁজ জানতে চাইছিলাম।
সবাই আমার দিকে একপলক তাকিয়ে‌ই পালিয়ে যাচ্ছিল জলে ভেজার ভয়ে।


এমন সময় ঠিক আমার মৃত বাবার চেহারার মতো দেখতে একজন মাথায় ছাতা এগিয়ে জানতে চাইল,
‘বাবা, এই অসময়ের জলে ভিজলে তুই আকাশ পাতাল জ্বরে ভুগবি,
তারচেয়ে বরং আমার ছাতাটার নিচে আয়, দু’জনে মিলেই সেই বাড়ির রাস্তাটা খোঁজ করি।’
এতটুকু বলেই তিনি ছাতাটা আমার মাথা বরাবর এগিয়ে দিলেন।
স্বপ্নে আমরা দু’জনে মিলে সেই বাড়ি খুঁজছি,
এক সময় বাবার চেহারার মতো মানুষটি জানতে চাইল কার বাড়ি খুঁজছি?
আমি কি বলেছিলাম স্পষ্ট মনে করতে পারছি না,
শুধু মনে আছে একটি বাক্য
- মা যে কোন বাড়িতে থাকে এখন?


আশ্চর্য ঘুম ভাঙার পর দেখি পুরো বিছানায়ই ফোঁটা ফোঁটা জলে ভেজা!

মাঘের শীতের ‌সন্ধ্যাবেলার ‌অসময়ে ঘুমে এমন অর্থহীন স্বপ্নে এইটুকু বুঝেছি-
‘মা, তোমার হাতের একটু স্পর্শের জন্য আমি পৌষের শীতের সন্ধ্যা রাত্রিতেও
দমকা ঝুম বৃষ্টির জলে ভিজেও রাস্তায় রাস্তায় তোমাকে খুঁজতে পারি।
তুমি তোমার বাড়ির ঠিকানা আমাকে দাও সন্ধ্যাবেলার এই অসময়ের স্বপ্নে।


মা,
এক বছরতো কাটিয়ে দিলাম তোমাকে ছাড়া
অথচ তোমার অভাবে আমি এখনো আত্মহত্যা না করে
দিব্যি সন্ধ্যাবেলার স্বপ্নে বৃষ্টির জলে ভিজতে ভিজতে
তোমার খোঁজ করি মৃত বাবাকে সাথে নিয়ে!
এখনো ঘুমের মাঝে কেঁদে উঠি তোমার শাড়ির আঁচলের জন্য,
ঘুম ভেঙে গেলে কান্নার জলে ভেজা বিছানায় শুধু তোমার শেষ নিশ্বাসটুকুর ঘ্রানে আমার শরীরও ভেজা থাকে।


মা,
আমি ইচ্ছে করেই প্রতি সন্ধ্যায় অ‌সময়ে ঘুমিয়ে পড়ি স্বপ্নে শুধু তোমাকে খুঁজবো বলে।’
——————-
র শি দ  হা রু ন
৮/০৩/২০২৩