মনোলীনা,
যাত্রাবাড়ীর মোর  থেকে তোমাকে
ডেমড়ার দিকে আসতে হবে,
রাস্তা অনেক জায়গায় ভাঙা,
ড্রাইভারকে বলবে আস্তে দেখে শুনে গাড়ি চালাতে,
ঝাঁকুনিতে তুমি কষ্ট পেতে পারো,
রাস্তায় অনেক জ্যাম থাকে,
ভুলেও গাড়ি কাচ নামাবে না,
হকারদের চিৎকার, ভিখারিদের কান্না
তোমাকে কষ্ট দিতে পারে,
রাস্তার ধুলো তোমার মেকআপ নষ্ট করে দিবে।


ত্রিশ মিনিট এর মত লাগবে
রানীমহল ব্রিজ এর কাছে আসতে।
তারপর কিন্তু তোমাকে গাড়ি থেকে নেমে
রিকশা নিতে হবে,
গলিতে গাড়ি ঢুকবে না, রাস্তা অনেক সরু,
জায়গায় জায়গায় ময়লা পানি জমে থাকে
রিকশার হুড ফেলে, শক্ত করে ধরে রাখবে।


তালতলা নেমে হেটে আসতে হবে,
তারপর আর রিকশা যাবে না,
দেখে শুনে পা ফেলবে,
না হলে কাপড়ে ময়লা পানি লেগে যাবে,
আমার নাম বললে সবাই বাড়ী দেখিয়ে দিবে,
তোমার দিকে সবাই কিন্তু হা করে তাকিয়ে থাকবে।


বাড়ী বলা ঠিক হয়নি, ঘর, অনেকটা ইটের বস্তিঘর,
নাকে রুমালটা ধরে রাখবে, না হলে ড্রেনের বাজে দুর্গন্ধ সারা জীবনের জন্য মাথায় ঢুকে যাবে,
নেড়ি কুকুরগুলো হঠাৎ তীব্র ভাবেডেকে উঠতে  পারে,
তুমি ভয় পেওনা, ওগুলো  এই  রকমই, কামড়ায় না।


সিঁড়ি দিয়ে খুব সাবধানে উঠবে,  রেলিং নেই,
পিচ্ছিল হয়ে থাকে, সব সময়,
দেখার লোক নেই, মা' র বয়স হয়েছে,
বাবা’তো অসময়ে,  আগে চলে গেছে,
চার তলার মা'র ঘরের দরজাটার
ঠিক পশ্চিম দিকের ঘরটাই আমার,
মনোলীনা,
পশ্চিম দিকের ঘরটাই আমার,
“তোমারই "বোকা মানুষ" টার।


মা আবেগহীন কন্ঠে বলে উঠতে পারে
“ এখানে এখন আর কেউ থাকেনা,
অনেক আগেই মরে গেছে
আমাকে একলা রেখে”।


মনোলীনা,
তুমি সাবধানে বাড়ী ফিরে যেও।
--------------------------------------------
জি এম হারুন অর রশিদ
১৭/০৭/২০১৭