‌অনেকদিন হলো আমার নিজের সাথেই দেখা হয়না।
এত দূরে চলে এসেছি কবে, টেরও পাইনি।
কত যে হাহাকারের এবড়োথেবড়ো রাস্তায় হেঁটে হেঁটে,
না চাওয়া অসংখ্য গোপন জ্বালা যন্ত্রণার কারাগারের দরজা পার হয়ে,
নিজের কাছে পৌঁছাতেই এখন আলসেমি লাগে, ভয় লাগে।


আহারে জীবন,
তবুও ভুলোমনে আজকাল সময় অসময়ে বিরহ জাগে নিজেরই জন্য।
তখনই ইচ্ছে জাগে দরজায় টোকা দিয়ে নিজেকেই চমকে দেই,
দরজা খুলে যখনই দেখবো আমি বেঁচে আছি,
আর হাতে রঙবেরঙের ফুলের তোড়া নিয়ে নিজে‌র জন্যই হাসিমুখে দাঁডিয়ে আছি,
চিৎকার করে আমাকেই বলবো,-“সারপ্রাইজ”।


সেই উত্তর যাত্রাবাড়ির ১০৭/৯ নং বাড়ি থেকে শৈশব খুঁজতে খুঁজতে মতিঝিল,কমলাপুর, ডেমড়া, চাঁদপুর, সিলেট আর নিকেতনের এই বাড়ি পর্যন্ত, কিশোর, যুবক আর মধ্য বয়সের আমাকে
ধরে ধরে সেলা‌ই করতে হবে আস্ত আমাকে দেখতে,
-গোপনে, খুব গোপনে।


ভয়ে অস্হির হয়ে থাকি তখন,
সেলাই করতে গিয়ে যদি ভুল সেলাইয়ের ফোঁড় দেই,
অথবা ভুল মানুষকে সেলাই করে ফেলি আমার সাথে।


আহারে জীবন!
প্রতিদিনই কত নতুন পুরাতন মানুষের সাথে আমার দেখা হয়,
তবুও আমারই সাথে দেখা হয়না বহুকাল।
আশা ছাড়িনা, দেখা একদিন হবেই।


দীর্ঘদিনের ব্যর্থতার পরও জেদি জুয়ারীদের মতো গো ধরে সারাজীবনকে বাজি ধরি আমার সাথেই-
গোপনে, একান্ত গোপনে,
একদিন না একদিন দেখা হবেই নিজের সাথে।


সেদিন হাতে রঙবেরঙের ফুলের তোড়া নিয়ে নিজেকেই স্বাগত জানিয়ে চিৎকার করে বলবো –
“বেঁচে আছি এখনো, সারপ্রাইজ”
—————————————


রশিদ হারুন
১২/০৭/২০২০