১.পৃথিবীর প্রথম ভাগ
---------------------------------
ডালিম ফোটার দিনে,পৃথিবীর সব টুকু
আনন্দ আঙুলে মেখে ডুবে যায় দিন;
শহরে ছড়ানো বীজের অনুভব--
অঙ্কুরিত বেদনা মাটির শীতলতায়,
ধূলো মাখা আঙুলে পিতার সাহচৰ্য
ঘুম-জাগানীয়া গান গায় আলোক শিশু ;
আধুনিক চিঠি মেলে ঘুমায় প্রনয়নী
মেয়েলি কথার বিভব তর্জমা  নিয়ে--
নবারুণ প্রেমিকের ভালোবাসা গালে মেখে
সুখি তরুণী শয্যা সাজায় প্রতিদিন
আর মুছে ফেলে প্রেমিকের আনত ঋণ;
দিন আসে তার আশ্চর্য নিগুঢ়োতায়
সহস্র ইতিহাস যার মুখস্থ বয়ানে
উড়ে আসে গৃহস্থ পাখি-- জিয়ারতে তারে
মানত শেষে আর ফিরে নাই ঘরে
পাখিদের যেতে দিলে অভিশাপ লাগে
পালকের সদকা নিয়ে ঘুমায় রূপান্তরে.....


২.পৃথিবীর শিশুতোষ গল্প
-------------------------------------
চারণ ভূমির পরতে পরতে তৃণের দীর্ঘশ্বাস
তোমাদের পথ থেমে আছে জলের সীমান্তে
পাখিদের চোখে বসন্ত রেণু,প্রণয় বিলাপ,
সম্পর্কের তরজমা নিয়ে দিন ওঠে --আর
প্রথম নদী দেখার গল্প শুনে তৃণ শিশুরা,
লোভাতুর শিকড়ে আদ্রতার ব্রত নিয়ে দিন গুজরায়;
বৃত্তের পরিধি ঘুরে নদী আসে প্রাচীন নারীর কাছে;
মাটিরও ক্লান্তি থাকে, পথ যদি নিভে আসে
তোমাদের নীবিড় বেদনার কাছে;
স্নিগ্ধ বেদনা জ্যোৎস্নার প্রেম হয়ে
ঝড়ে পড়ে তোমাদের শীতল সীমান্তে....


৩. পৃথিবী দীর্ঘশ্বাস ইতিহাস
---------------------------------------
ক্ষুধাতুর চোখে পৃথিবীর দীর্ঘ ইতিহাস লেখা
মানুষ খুড়ে যায় নিজ নিজ সমাধি;
জীবন পৃথিবী সমসাময়িক,
মানুষের দূরত্ব মানুষের নাগালের বাইরে
কি ভালো! কি ভালো! কেউ আছে নাকি?
হাতের প্রতিটা আঙুল গুটিয়ে রেখে
খুলে রাখে আগামী খরচের খাতা,
অথচ একটু শিথিলতায়
বয়ে যায় আশচর্য কোমল নদী;
যে নদী তোমাদের করতলে গোপন
মুঠো খুলে দিলেই বয়ে যায় দশ দিকে,
সে নদী ছুড়ে দাও বিশ্বস্ত আঙুল থেকে;


৪. পৃথিবীর পরিশিষ্ট
-------------------
আঁধারেরও করুন কাহিনি থাকে
পরিশিষ্ট জুড়ে থাকে পরাধীন তৃষ্ণার জল
আশ্লেষে অনল যার অন্তহীন তমশা ব্যধি
সুপ্ত ইতিহাস লেখা তার তমোহর বৈভবে;
সহস্র শতাব্দী ব্যাপি বয়ে যায় ধ্রুপদী বিষাদ,
স্নিগ্ধ কথার নদী মুছে দিবে তৃষ্ণার ওম ;
পঞ্চমী রাত্রির চরাচরে চাঁদের ছায়া-ছবি
প্রেমিকের বাজুতে যেন প্রমিকার কবজ
এমন তমোহর রাত্রি সমস্ত সন্তাপ তুলে,
দূর দূরতম নক্ষত্রের পবিত্র বাসনা সাজায়
মানবিক আলোক আয়োজনে; যেন
পৃথিবীর যাবতীয় ভালোবাসা অর্গল খুলে
বসে আছে রুগ্ন প্রেমিকের শয্যা পাশে।