হঠাৎ তোমার সাথে দেখা হবে  ভাবিনি কখনও।
দেখা না হলেও দুঃখিত নই।
প্রতিদিন দেখা হয়। কথা হয় কোন না কোন।
"আমি আসিফ।"
চিনি।খুব মনে আছে।বিয়ে মন্ডপে দেখেছি।
মঙ্গল প্রদীপ নিয়ে হেঁটে যেতে ছিলেন।
আমার বুকের উপর দিয়ে।
আপনি আমাকে  চেনেন না হয়তো।দেখলেও মনে নেই।
এত মুখের ভিরে মধ্যি মনে থাকে?
তুরিও হয় তো বলেনি। গল্প করেছে সবার।
এক মাত্র আমাকে ছাড়া।
আমি রনন। রনন হাওলাদার।
এম, এ পাশ দিয়ে বেকার।
এক সময় হন্যে হয়ে চাকুরী  খুৃঁজেছি,
এখন  প্রয়োজন নেই।দুচার জন ছেলে পুলে পড়াই।
বাবুইর মতো বাসা বাঁধা স্বপ্ন তো নেই।তাতে চলে যায়।
 যখন স্বপ্নছিল সবই ছিলো।একটি চাকরি দরকার ছিলো।
ঘরের দরকার ছিলো।সংসারের।


তুরিন আমার কয়েক বছরের ছোট। বয়সে ছোট হলেও।
অনেক বড় করে রেখেছি। বিশাল ক্যানভাসে সারি সারি
ছবি এবং স্মৃতি।
এক গাদা গাঁদা ফুলের সঙ্গে।


মেয়েরা বোধয় একটু এ রকম।বিয়ে পরে।
পেছন ফিরে তাকায় না।সামনে নিয়ে আসেনা অতীত।
আগের সময় হলে হয় তো, বাদাম ওয়ালা ডেকে
দুটাকার বাদাম নিয়ে বসে পড়তাম। তোমার পাশে
প্ল্যাটফর্মে।সময় অনেক বদলে গেছে।
এক ঠোস বাদাম দিয়ে আপ্যায়ন করতে পারি?


আস্তে হাটো।আরে পরবে তো তুরিন।হাঁটা ও ভুলে গেছো।
স্লিপ করলে শরীরে কাঁদা লাগবে নিশ্চিত।
শহরের পিচ ঢালা পথ না এটা।
ধান ক্ষেতের আল।চিলতে করা,সরুপথ।
সব কিছু ভূলে গেছো তুমি।


ওহ্  ।,বড্ড ঠান্ডা। ক দিন  থেকে শৈত্যপ্রবাহ।
গায়ের সুয়েটারে শীত মানছে তো?
আগের সময় হলে হয় তো।আমার,গায়ের শাল জড়িয়ে দিতাম।
সময় তো অনেক বদলে গেছে।
অনেক দিন পরে দেখা।তোমার বিয়ের পর এই প্রথম
এবার বর্ষায় কদম গাছে অনেক কদম ধরে ছিলো।
হিজল গাছে দুইটা শালিকের ছাও ফুটেছে।
নৌকো বাইচে এপাড়ার ছেলেরা জিতেছে।
খুব বড় বিজয় মিছিলহয়ে ছিলো।
বিজয় মিছিলে শুধু তুমি ছিলে না।


"এই শীতটায়, আছেন তো আসিফ সাহেব?"
"কি বলছেন ভাই? পাঁচ দিনের ছুটি।"
"তুরিন তো। থেকে যেতে পারে?"
"না। আমি থেকে গেলে,। ওর সকালের নাস্তা,
বক্সে লাঞ্চ ভরা।টাই বাঁধা।কে করবে শুনি?"
বেশ মায়া জমেছে দেখি ক'দিনে।
কুড়ি বছরের মায়ার জন্য মায়া নেই?


কদম পাগলে মেলা বসবে কদিন পরে।
পাঁচটি শীত, চলে গেলো। যাওয়া হয়নি।                    
রাশে উঠা হয়নি।চরকায় ও।হাওয়াই মিঠাই।
তিলের খাজা। বাতাসা আর মুরলির মতো স্বাদ।
লাল ফিতা।রেশমি চুড়ি।মাটির টিয়া।


এ শীতটা থেকে যাও।ক'দিন পরে।
শর্ষে ফুল ফুটবে।হলুদ প্রজাপতি উড়বে ফুলের উপর।
ধরে শিশিতে ভরে দেবো।
"না।পাপ।মহাপাপ দাদা।"
এ ক'দিনে পাপ পূণ্য বেশ শিখেছো দেখি।
তিলে তিলে গলা টিপে হত্যা করছো।
 তা কি পাপ নয় তুরিন?
আগের সময়টা হলে হয় তো।জোড় করে ফ্রকের ভিতর,
ঢুকিয়ে দেতাম প্রজাপতি।সে অধিকার  নেই আজ।
হাত দুটো ধরে জোর করে বলতে পারতাম।


"রনন সাহেব।ট্রেন বোধয় ছেড়ে দেবে।"
 তাই তো। হুইসে কাঁপিয়ে তুলছে পৃথিবী।
উঠুন।ভেবে ছিলাম জানালা দিয়ে হাত নেড়ে বলবে,
"বাড়ি এসো।দেখে যেও আমাকে।