দ্বারকেশ বসুদেব-দেবকী তনয়
রাখালের ছদ্মবেশে ছিল মথুরায় ,
উচ্ছল তারুণ্যে ভরা যৌবন কাল
যমুনার প্রেম-জলে শুধু সাঁতরায় ।
সপ্তপত্নী মহিষীদের করিয়া ব্রাত্য
রাধিকা-সায়রে পড়ে হাবুডুবু খান ।
আয়ান-ঘরনী রাধা , বিধি ভঙ্গ , তবু—
বৈষ্ণব কবিরা তাকে করেন মহান ।
পরিণত বাসুদেব উপদেষ্টা হন অর্জুনের
কুরুক্ষেত্রের অশুভ শক্তি করিতে সংহার
যোগ-জ্ঞানে যুদ্ধে লিপ্ত করিয়া পার্থকে
কৌরব-বিরোধী পক্ষের তিনি অবতার ।
আত্মদর্শন করে যেই স্বপ্ন ভঙ্গ হল অর্জুনের
অন্তরের সুপ্ত কোঠায় জেগে ওঠে প্রকৃত স্বরূপ ,
জ্ঞানযোগের ধ্যান মাঝে থাকিয়া নিমগ্ন
বিষয় নির্লিপ্ত জ্ঞানে দেখে বিশ্বরূপ ।
নিমীলিত চোখে তার কষ্টি-কালো আঁধারের
অন্তহীন বেষ্টনীর অনন্ত বেড়া-জাল
তার মাঝে সীমাহীন মহাজ্যোতি হয় দৃশ্যমান ,
তাতেই দেখেন সবার সুস্পষ্ট ত্রিকাল ।
অনন্ত তমিস্রা  দিয়ে বহির্বিশ্ব ঘেরা বিদ্যমান ,
সুচিন্তিত নাম করণ ‘কৃষ্ণ’ তাই হয়েছে সার্থক ।
বহির্বিশ্বের মহান কৃষ্ণ প্রকৃতই স্রষ্টা জগতের ,
মহাকাব্য কাহিনীর বাসুদেব প্রখ্যাত নায়ক ।
অনুগামী ভক্তদের স্তুতিগানে কীর্তিমান যাঁরা
মহামানব , অতিমানব , ভগবানে হন পরিগণ্য ।
অগণিত ভগবান , দেব-দেবী আছে এ জগতে ,
স্রষ্টা শুধু একজনই , সবার ঊর্ধে তিনি , তিনি অনন্য ।
                       ***************