এ শব্দটি কানে এলে প্রতিবারই-
আন্দিজ পর্বত থেকে কেঁদে নামে আরও একটি নদী,
মাঝরাতে ঘুম ভাঙার মতো, স্বপ্ন-বাটি উল্টে পড়ার মতো,
মর্মর তুলে ঘেমে আমি নেয়ে যাই; এ শব্দ শুনলে
নিমেষে সুখী হই; স্বস্তির জায়নামাজে জীবন নামাই ।


এ শব্দটি কানে এলে বোধের বারান্দাজুড়ে
শুয়ে থাকে সভ্যতা, বিবেকের দরোজার ফাঁকে
উঁকি দেয় চকচকে নল, কারফিউ ঘেরা রাত,
শ্বাস রুদ্ধকর বাতাসে কেবলই অস্ত্রের উল্লাস শুনি,
শব্দটি কোথাও দেখলে দীর্ঘ কারাবাসের চিহ্নগুলো
চোখের জলে আটকে যায়, স্বপ্নগুলো মাথাঝাড়া দেয় ।


এ শব্দ কানে এলে আমি কাঁপতে থাকি,
যাপিত সময়কে কুচকুচে ডুমুরের মতো মনে হয়;
মনে পড়ে বর্ষনের মতো বুলেটের অবারিত বৃষ্টি,
বাতাসে মৃত্যুর অগণিত নামতা ভাসে,
বারুদ ও বিদ্যুতের জিভ থেকে লালা ঝরে ।
এ শব্দ কোথাও যখন পাঠ করতে দেখি,
বাটখারা দিয়ে থ্যাতলানো আধমরা মন নেচে ওঠে,
সতেজ হয়; সব স্বপ্নকে রোদে দিতে মন চায়;
ইচ্ছে হয় দিগ্বিদিক ছুটে যাই, অস্তিত্বের সীমা নিয়ে
ছিন্ন করি মাথার খুলি; এ শব্দ শুনলে
একটি স্বপ্নীল অথচ সবচেয়ে শক্তিশালী
তর্জনী চোখে ভাসে ।


এ শব্দ কানে এলে মনে হয়
নিজের লাশ বয়ে বেড়াচ্ছি আপনার কাঁধে,
ভীষণ পুড়ে যাচ্ছি ভেতরে ভেতরে, তারপর
ছাই হয় পাজরের ঘর-বাড়ি; মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে
উঠে বসি জীবন-বিছানায়;
যেনো প্রতিটি উদ্যান জুড়ে, সব ঝিলে, ফুলের বদলে
ফুটে আছে এই শব্দটির মুখ,
এ শব্দটি বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কী !