মিমি, কোথায় আছিস, কেমন আছিস তুই ? যে নীল
আকাশ নিয়ে, চাঁদ-সূর্য-পূর্ণিমা নিয়ে, সাগর-নদী নিয়ে,
মেঘ-বৃষ্টি-জল নিয়ে তুই কবিতা লিখতিস, সবাই তো
ভালোই আছে, শুধু জানা হয় না, কেমন আছিস তুই ?


তোর প্রিয় আকাশের কাছে জানতে চেয়েছিলাম তোর
খবর, কোথায় আছিস, কেমন আছিস তুই ? স্বার্থপর
ঐ আকাশ নির্বাক, নির্লিপ্ত থেকেছে বরাবরের মতই,
তুচ্ছ মানুষ আমি, আমার সুখ দুঃখে তার কিছু যায়
আসেনি। মানবিক সুখ-দুঃখ, হাঁসি-কান্নার সাথে তার  
কোন লেনদেন থাকতে নেই, সে অধরা নিঃসীম আকাশ ।


মিমি, আকাশের কাছে উত্তর না পেয়ে গিয়েছিলাম তোর
প্রিয় নদীর কলতানের কাছে, গিয়েছিলাম সমুদ্রের নীল
ঢেউয়ের কাছে, সাদা মেঘের কাছে, ফুলের সৌরভের কাছে,
পাখির কলরবের কাছে, কেউ আমাকে তোর খবর দেয়নি।
কেউ জানায়নি, কেমন আছিস, কেমন থাকিস তুই ?  
  
মিমি, তোর খোঁজে আমি কোথায় কোথায় না গিয়েছি,
কার কার কাছে যে তোর খোঁজ করেছি, সে কেবল
আমার বিধাতা জানেন, যে পথ দিয়ে পথকে ধন্য করে
গরবিনী তুই যেতিস তার কাছে চেয়েছিলাম তোর খবর,
ঝুল বারান্দার যে রেলিং ধরে রোজ ম্লান বিকেলটাকে
রাঙিয়ে দিয়ে তুই দাড়াতিস, ছাদের যে কার্নিশে তোর
গোসল শেষে মেলে দেয়া ভেজা কাপড় গুলো আমার
হৃদয়ে ভালোবাসার পতাকা হয়ে উড়তো, তোর ঘরের
দক্ষিণের যে জানালাকে আমার সবচেয়ে দর্শনীয় বস্তুতে
পরিণত করে জানালা ধরে আনমনা তুই নিজের ভেতর
মগ্ন হয়ে বসে থাকতিস, তোর ঐ উদাসী অবয়ব আমার
মানসপটে এখনো এতোটাই সজীব যে মনে হয় সব বুঝি
ঠিকঠাক আগের মতই আছে, এখন ফিরে গেলে দেখব
তুই বসে আছিস ঠিক আগের মতো, সেই যে প্রথমবার
নাকের নোলক কিনে, সেই নোলক পড়তে গিয়ে নাকে
ব্যথা পেয়ে কি কাণ্ডটাই না করেছিলি, মনে আছে তোর ?


যে হকার রোজ তোর বাসায় পত্রিকা দিত, তোর বাসার
বাজার সর্দার, রোজের দুধওয়ালা, বাগানের বুড়ো মালী,  
এমনকি যে অন্ধ ভিক্ষুকটা তোর বাসায় রোজ ভিক্ষা
করতো তার কাছেও ভিক্ষা চেয়েছিলাম তোর খবর, অথচ
কেউ আমাকে জানায়নি তোর কথা, সবাই তো ভালো আছে,
শুধু জানা হয়নি কোথায় আছিস, কেমন আছিস তুই ?


( আগামী পর্বে সমাপ্য )


বিদ্রঃ সাময়িক বিরতি শেষে আগামীকাল ২৬-০৮-২০১৩ ইং তারিখে "ফেসবুক কথনঃ পর্ব ০৩ ফেসবুক ও নতুন সম্পর্কঃ চতুর্থ কিস্তিঃ নাম দিয়েছি “বউ”  নিয়ে ফিরছি ইনশাআল্লাহ, সবাইকে পড়ার অগ্রিম আমন্ত্রণ রইল ।