পূর্বসূত্রঃ  

[ প্রিন্সেসঃ ইস... তুমি না একদম আমাদের মকবুল মামার মতো ।
         এইটা তুমি কি বললা ! কোন মানে হয়, হি হি হি !

..............................................................................

..............................................................................

প্রিন্সেসঃ সব সম্পর্কেরই কিছু ডাইমেনশন থাকে । আম্মার কাছে
        যে বিষয় গুলো সম্পর্কের জন্য গুরুত্ব পূর্ণ বলে বিবেচ্য তা
        হল প্রথমতঃ বিশ্বাস, দ্বিতীয়তঃ বোঝাপড়া, তৃতীয়তঃ শেয়ারিং
        তারপর আসবে পারস্পরিক সন্মান বোধ । প্রেমিক প্রেমিকার
       ক্ষেত্রে অবশ্য এর বাইরেও একটা রসায়ন কাজ করে যা প্রেমিক
        বা প্রেমিকাকে প্রেমাস্পদের কাছে আর দশটা মানুষ থেকে সম্পূর্ণ
        আলাদা একটি  অবস্থানে নিয়ে যায় । গোটা পৃথিবী চেয়ে একটি
        মানুষ বেশী গুরুত্ব পূর্ণ হয়ে ওঠে একটি সত্যিকার ভালবাসায়  ।  
         ( আমার উদ্দেশ্য পুরো সফল, সে মনের দরজা খুলে দেয় ।)  ]

ষষ্ঠ পর্বঃ নতুন আলোর ভোর ।  

আমিঃ  ভালো বলেছ, আমি আসলে অনেক প্রাক্টিক্যাল, তোমার এই কথা
        গুলোর সাথে আরও একটি বিষয় যোগ করতে চাই, আর হল
           “Give & Take” - দেবে নিবে মেলাবে মিলবে । সম্পর্কের ভেতর    
         আস্থা ও বিশ্বাস, বোঝাপড়া, শেয়ারিং, পারস্পরিক সন্মান বোধ,
         রসায়ন এগুলো হল মানিসিক বিষয়, আর “Give & Take” টা হল
         বাহ্যিক, তবে দুইটাই দরকারী ।
         ( আমি সমঝদার হয়ে উঠি, চিন্তার একাত্মতা প্রকাশ করি নিজের
           স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে। খুব কাজের পদ্ধতি এটা । পরীক্ষিত । )    

প্রিন্সেসঃ হ্যা, এই সত্যটা না মেনে একটা ভালো সম্পর্ক হতে পারে না,
         তবে বাস্তবে এমন মানুষও আছেন যারা নিঃস্বার্থ ভাবে, কোন
         প্রতিদানের আশা না করে ভালবেসে যান ।

আমিঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনও হয় । যেমন ধরো মা বাবার  নিঃস্বার্থ
       ভালোবাসা সন্তানের কাছ থেকে কিছু পাবেন এই প্রত্যাশা করে
        কিন্তু তাকে মানুষ করেন না । তারপরেও মানুষের কিছু “Basic
            Needs” থাকে, যেগুলো তাকে কোন না কোন ভাবে পূরণ করতে
        হয় আর এই প্রেক্ষাপট থেকেই তৈরি হয় “Give and Take”.

প্রিন্সেসঃ এইসব Biological Needs গুলো না থাকলে মানুষ হয়তো আরও
          উন্নত জীবনধারার অধিকারী হতে পারতো ।

আমিঃ মনে হয় না, তখন মানুষের ভেতর এই অভাব বোধ, এই অপূর্ণতা,
       এই কষ্ট থাকত না ফলে নতুন কিছু সৃষ্টি করার বা নিজের সীমা
       ছাড়ানোর এই চেষ্টা থাকতো না । মানুষের জীবন হয়ে যেত বৈচিত্র্য
       হীন ও ক্লান্তিকর । নিদিষ্ট কোন লক্ষ্য ছাড়াই মানুষ বেঁচে থাকতো
       এক নিস্তরঙ্গ ভোগবাদী জীবনের ধারক হয়ে ।

প্রিন্সেসঃ বাহ, দারুণ বলেছ তো, এভাবে তো কখনো ভেবে দেখিনি ।

আমিঃ মকবুল মামারাও মাঝে মাঝে দার্শনিক হয়ে ওঠে এই আর কি ,
        হা হা হা ।
     ( আমি নিজেকে মকবুল মামা বলে করে তার মকবুল মামা
       গল্পের খোঁচাটা পুষিয়ে নেবার উদ্যোগ নেই। )    

প্রিন্সেসঃ তাইতো দেখছি, হি হি হি ।

আমিঃ এত হাইসো না, দাঁত পইড়া যাইব, পানি চাবাইয়া খাইতে
       পারবা না, বিয়া হইব না ।
     ( আমি পরিবেশ হালকা করার উদ্যোগ নেই । )  

প্রিন্সেসঃ আমি তো পানি চাবাইয়া খাই না । হি হি হি ।

আমিঃ তাহলে কি চাবাইয়া খাও  ?

প্রিন্সেসঃ তোমার মাথা , হি হি হি ।

আমিঃ পানি চাবাইয়া খাও না ঠিক আছে, কিন্তু বিয়ার কি হইবো ?
        দাঁত পইড়া গেলে তো বিয়া হইব না ।

প্রিন্সেসঃ চিন্তা কিসের তুমি আছো না, আমি না তোমার বউ হই,
         আমি বিয়ের কথা চিন্তা করতে যাবো কেন, হ হি হি ।  
         ( কথায় আছে একবার যদি কোন মেয়েকে হাসানো
            যায় তাহলে তার সাথে অনেক দূর যাওয়া যায় ।
            মনে হচ্ছে বরফ গলতে শুরু করেছে । )  

আমিঃ যা বলছ চিন্তা ভাবনা করে করে বলছ তো ? দেখো
       পরে যেন আবার কথা ঘুরিয়ে নিও না । হা হা হা  ।

প্রিন্সেসঃ তুমি তো আগে বলেছ, তুমি চিন্তা ভাবনা করে বলেছ
         তো ? নাকি তুমি অনেককেই এভাবে বল ? আচ্ছা আগে
         আর কাকে কাকে, মোট কত জনকে “বউ” বলেছ তুমি ?

আমিঃ দেখো তুমি কিন্তু আমাকে আবারো তোমার মকবুল মামার
        দলে ফেলে দিচ্ছ । হা হা হা ।

প্রিন্সেসঃ আমি ফেলে দিচ্ছি নাকি তুমি নিজেই নিজেকে মকবুল
         মামার সমগোত্রীয় প্রমাণ করেছো, করছ ? হি হি হি ।

আমিঃ একটা ঘটনা দিয়ে কি আর কোন মানুষকে বিচার করা
        যায় বা বিচার করা উচিৎ । আর তোমার মকবুল মামা
        কেও তো আমার খুবই রোম্যান্টিক ও ভালো মনের মানুষ
        বলে মনে হয়েছে ।

প্রিন্সেসঃ হুম .... আমার প্রশ্নের উত্তর কিন্তু পাইনি ।  তুমি কি সবাই
         কেই এভাবে “বউ” বল ? আগে আর কাকে কাকে, মোট কত
         জনকে “বউ” বলেছ তুমি ?

আমিঃ নাহ, অত সৌভাগ্য কি আর আমার হয়েছে । আমি তো চাই
       সব অষ্টাদশী সুন্দরীর প্রেমিক হতে । আমার আরও অনেক
       অনেক গোপন ইচ্ছে আছে আমার একটি কবিতাও আছে এই
       থিমের উপর “ইচ্ছে বিলাস” । অবশ্য এটাকে কবিতা বলা যাবে
       কিনা বা কবিতার পর্যায়ে উত্তীর্ণ হয়েছে কিনা তা প্রশ্নসাপেক্ষ ।

প্রিন্সেসঃ তাই নাকি তুমি কবিতাও লেখ নাকি ? বেশ বেশ ।

আমিঃ ওপার বাংলার একজন বিখ্যাত লেখক বলছিলেন
   “এমন একজন বাঙ্গালী খুঁজে পাওয়া কঠিন যে জীবনে
      ফুটবলে একটা লাথি মারেনি বা দু লাইন কবিতা লেখেনি”।
      বাঙ্গালির এই কাব্য প্রেমকে রসিকতা করে আরেকজন
      সমালোচক বলেছিলেন “কবিতা কবিতা আর কোরনা, কবিতা
       হয়েছে বাসি বাংলাদশে কাকের চাইতে কবির সংখ্যা বেশী” ।
      আমি এই দুলাইন কবিতা লেখা কাক কবিদের একজন ।

প্রিন্সেসঃ কাক কবি, হি হি হি । ঠিক আছে জনাব কাক  কবি
      আপনার সেই কবিতা শুনিয়ে বাধিত করতে আজ্ঞা হবে কি ?
      
আমিঃ হা হা হা , ভাবছি শ্রোতা নিতে পারবে কিনা । মানুষকে
        অনেক বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয় । কিন্তু ইচ্ছেরা তো
        এইসব কোন অনুশাসনে আবদ্ধ নয় । তাই তারা অনেক
        স্বাধীন, অনেক প্রখর ।এটা লেখার সময় যা মন চায় তাই
        তুলে এনেছি কোন ভুল শুদ্ধের বিচারে যাইনি । এটা শুনলে
        আমার সম্পর্কে শ্রোতার ধারনা খারাপও হয়ে যেতে পারে ।

প্রিন্সেসঃ তাই বুঝি । তাহলে তো শ্রোতার শোনার আগ্রহ আরও
        বেড়ে গেলো । শ্রোতা কিছু মনে করবে না, শোনানো হোক ।

আমিঃ আচ্ছা শোনাবো, তার আগে আবারো বলে রাখছি কেউ যেন
       পরে দোষ না দেয় যে আমি তাকে আগে সাবধান করে দেইনি ।

প্রিন্সেসঃ না, কেউ দোষ দেবে না । কেউ কথা দিচ্ছে ।

বিদ্রঃ সাময়িক বিরতির পর আজ আবার “ফেসবুক, আমি এবং একজন প্রিন্সেস আদিয়াত” লেখাটির “ষষ্ঠ কিস্তি” পোস্ট দিলাম । আগে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি পোস্ট দিয়েছিলাম । যারা ঐ কিস্তি পাঁচটি পড়েননি তাদের অনুরোধ করবো পড়ে নিতে নাহলে পুরোপুরি রস আস্বাদন করতে অসুবিধা হবে। লেখাটা অনেক বড় হবে । লেখার কাজ চলছে । ১০০ পৃষ্ঠা + লেখার ইচ্ছে আছে, মাল, মসলাও রেডি । আপনি ঠিকই শুনেছেন ১০০ পৃষ্ঠার একটি কবিতা । ভবিষ্যতে হয়তো একটি কবিতা দিয়েই একটি বই হলেও হতে পারে। সেটা নির্ভর করছে আপনাদের ভালো লাগা ও সমর্থনের উপর। কয়েকটি ধাপে বাকি অংশ গুলো আসবে । এটি মূলত ফেসবুক নির্ভর নতুন ঘরানার একটি গদ্য কবিতা । প্রথাগত কবিদের অনেকের কাছেই এটাকে কবিতা ভাবতে কষ্ট হতে পারে । এটা লিখতে গিয়ে আমারও একটি নতুন ধারা বলে মনে হয়েছে । অনেকটা Dialogue বা Conversation ধরনের যার প্লাটফর্ম হচ্ছে ফেসবুক ।  প্রথম দুইটা পর্বে যে গদ্য কবিতার কথা বলেছিলাম এটা সেই পরীক্ষা মূলক গদ্য কবিতা । তাই তালমিল বা ছন্দের ভেতর নয়, কাব্যিকতা খুঁজতে বলবো ভাষার ব্যবহার, উত্তর প্রতি উত্তর ও স্বগতোক্তির ছন্দের ভেতর। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না যেন । সাথে থাকুন। ধন্যবাদ ।

রচনাকালঃ ২৫-০৮-১৩ ইং                                                                  (চলমান)

দৃষ্টি আকর্ষণঃ আজ আসছে এই লেখার সপ্তম কিস্তি । এই কবিতাটির প্রথম পর্ব শুরু হয়েছিল ফেসবুক কথন নাম দিয়ে । ধারাবাহিকতায় তৃতীয় পর্বেও ঐ একই নাম থেকে গেছে কিন্তু এমন একটি আধুনিক কবিতার এমন পুরনো ধাঁচের নাম ঠিক মানাচ্ছে না । তাই এই পুরো পর্বটির নাম পরিবর্তনের কথা ভাবছি । এখনো চূড়ান্ত করিনি কিন্তু বদলাব । এই ব্যপারে আপনাদের মতামত ও নাম পরামর্শ জানতে চাচ্ছি । ধন্যবাদ ।