- কথা তো তুমি অনেক পাকা পাকা বল, তা কি নাম
তোমার শুনি ?

- পরী বানু ..................।
জীবন থেকে অনেক ঠেইক্যা ও ঠইক্যা শেখা এই সব কথা ।

- এটা কি তোমার জন্মের পর  বাবা মায়ের দেয়া আসল
নাম না নকল ? আমি শুনেছি তোমাদের লাইনের প্রায় সব
মেয়েরই নাকি একাধিক নাম ও ঠিকানা থাকে, আইনগত
ঝামেলা, নিজেদের লুকিয়ে রাখা এবং আরও কিছু কারনে
তোমরা নাকি পরিবেশ ও অবস্থা বুঝে ভিন্ন নাম ঠিকানা
ব্যবহার করে থাকো ...... ?

- এইটা ঠিকই শুনছেন আপনি, শুধু নাম ঠিকানা বদল না,
চামড়া বাচাইতে আমাগো আরও কত কিই তো করতে হয়,
সে আপনি ভাবতেও পারবেন না  ............।

- তা তোমার আসল নামটা কি বল তো দেখি ? আসল
নাম কি একটা না একের বেশী .................. ?

- না আসল নাম একটাই, লাইনে কখনো এই নাম কই
না, শুক্কুর বারে আমার জন্ম তাই বাপ মায় আদর কইরা
নাম রাখছিল শুক্কুরী, পরী বানু, সখিনা, গোলাপি, ফুলবানু
এমন আরও কত শত নাম এখন আমার ............      

- তা এই ভাড়ায় খাটা লাইনে এলে কেন ............... ?

- সে শুইনা আপনি কি করবেন, আপনি কি সাম্বাদিক
নাকি ? পেপারে লেখা ছাপাইয়া পয়সা কামাইবেন ?
যে কাজে আইছেন সেই কাজের কথা পারেন, খালি
খালি প্যাচাল পাইড়া তো অনেক সময় নষ্ট করলেন,
এখন অকাজের কথায় আর সময় নষ্ট না কইরা কাজের
কথা কন, এই সব প্যাচাল কোনদিন শেষ হইব না,
তাই এই ভাবে সময় নষ্ট করে আপনার বা আমার
কোন লাভ নাই ..................।

বিদ্রঃ আজ প্রকাশিত হল “নিশিকন্যা” সিরিজের নবম পর্ব । আমার ভাবনা যাকে এই লেখার কেন্দ্রীয় চরিত্র আমি হিসেবে দেখা যাবে এবং একজন কল্পিত অন্ধকারের মেয়ে যাকে নিশিকন্যা বলে জানে সমাজ, ভেতর তার পেশাগত কিছু বিষয়ের কথোপকথন বা dialogue ঘরানার এই লেখার মাধ্যমে কিছু সত্য উদঘাটনে ব্রতী হয়েছি । আমাকে বেশ কয়েকটা এন জি ও র সাথে বেশ কিছু যৌনকর্মী ও তাদের সন্তানদের স্বাস্থ্যসেবা ও পুনর্বাসন মুলক প্রকল্পে কাজ করতে হয়েছে, সেই সুবাদে এদের জীবনধারা খুব কাছ থেকে সরাসরি দেখার সুযোগ হয়েছে, সে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হয়েছে এই লেখা প্রথমে এই এই সিরিজটি আমার কাছে লেগেছে গল্প ও কবিতার মাঝা মাঝি, ভাষা ও গঠনে আছে গল্পের ছোঁয়া, পরিবেশনায় আছে কবিতার আমেজ, আমার মুল ইচ্ছের যে জায়গাটি ছিল তা হল সাধারণত কথোপকথন যেমন হয় ঠিক তেমন অবিকৃত ভাবেই এই তাকে তুলে আনা, অনেকে হয়তো এই লেখায় কাব্যিক ঢং প্রত্যাশা করতে পারে কিন্তু আমার মনে হয়েছে ওরকম কিছু আরোপ করলে লেখা কৃত্রিম হয়ে যাবে, কাব্যিকতা দিতে গিয়ে তার বক্তব্যের সাবলীলতা হারাবে, তাই ঐ পথে হাটি নাই । প্রথমে ১৫ পর্ব হবার কথা থাকলেও অবশেষে চূড়ান্ত ভাবে ২০ পর্বে ৫৫০ লাইনের দীর্ঘ এই লেখাটি দুইটি ধাপে আসবে । ১৪০ থেকে ১৪৯ নং পোস্ট হিসেবে আসবে এই লেখার প্রথম দশটি পর্ব । তারপর আসবে ১৫০তম লেখা “অনন্ত বাসনা” । এরপর আবার সুবিধামত সময়ে আসবে বাকি ১০ টি পর্ব । সবাইকে পড়ার আমন্ত্রন রইল । আশা করি ভালো লাগবে।