বিকেলের বিষণ্ণতা ভাঙছে কফির ধোঁয়া,
মুখোমুখি বসে আমি ও ঈশ্বর,
এই দৃশ্যটি পরাবাস্তব হতে পারতো, হয়নি,
মানুষের মাঝেই বাস করেন মহামহিম ঈশ্বর,
ঈশ্বর নাক চুলকে একটু লাজুক হেসে বললেন,
আমি অ্যামেরিকান এক্সপ্রেসো ছাড়া খাই না,
ভাগ্যিস এখানে কোন সাংবাদিক নেই,
থাকলেই শুরু হয়ে যেত মারণ প্রশ্নবাণ,
অ্যামেরিকান এক্সপ্রেসোর কি ক্ষমতা, কি ক্ষমতা !
যেন পক্ষপাতের কোন বিধিলিপি ঈশ্বরের নয়,
সব দায় অ্যামেরিকান এক্সপ্রেসোর !


ঈশ্বর আবার একটু লাজুক হেসে বলে ফেললেন,
আমার কিন্তু ডানহিল ছাড়া একদম চলে না,
ইঙ্গ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের গোপনাঙ্গ না খুড়ে
আমি সহাস্যে বললাম, ডানহিল তো অনেক খেয়েছ,
এবার একটা পাতার বিড়ি খেয়ে দেখো ঈশ্বর
একদম মাটির গন্ধ পাবে, তাজা ঘামের গন্ধ পাবে,
ডানহিল তোমাকে যা কোনদিন দিতে পারেনি, পারবে না,
ঈশ্বর নাক কুঁচকে নিরুত্তর রইলেন, যেমন থাকেন,
ইতর জনের বেলায়, সব সময়, অভ্যেস হয়ে গেছে ।


এদিক ওদিক তাকিয়ে বুক হাট করে খোলা দরোজা,
হাওয়া আসা যাওয়ার জানালার শার্শিতে দিগন্তের চোখে
চোখ পড়তেই ঈশ্বর যেনো একটু জড়সড় হয়ে উঠলেন,
একটু উশখুশ করে ষড়যন্ত্রীর মত নিচু গলায় বললেন,
ঘরের সদর দরোজাটা এবার চুপিসারে বন্ধ করে দাও,
জানালার কপাটগুলো সব আলগোছে ভিজিয়ে দাও,
তোমরা বড় বর্বর, ঠিকঠাক প্রাইভেসির মানে বোঝ না,
কিছু কথা আছে, গোপন, খুব গোপন, খুব, খুব, খুব ।


দুপুরের অন্তর্বাস খুলে সময় এখন সবে সতেরোর তরুণী,
দরোজার ওপাশে শুয়ে আছে মধুরিমাদের সুখ বাড়ী,
জানালার চোখে চোখে রেখে ছোঁয়া যায় হাসি কান্না,
এমন সময়ে কিছুতেই কোন দরোজা বন্ধ করা যায় না,
কোন জানালায় খিল দেয়া যায় না, ঈশ্বরের জন্যেও নয়,
আমি বললাম এই দরোজা এখনই বন্ধ হবার নয়,
জানালার আরশিতে বেঁচে আছে প্রিয় পড়শির মুখ,
যা বলার আছে বলে ফেল, এখনই, এখানেই, এভাবেই,
আজ নয় তো, আর কোন দিন নয়, নয়, নয় ,নয়
একটু কাঁচুমাচু ঈশ্বর অনিচ্ছাসত্ত্বে জানতে চাইলেন,
এই ঘরজুড়ে যে উথাল পাথাল মৌগন্ধ আকুল করে দিচ্ছে,
সিদ্ধির নেশায় আমি গতবার ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি
ওটা কি কোন কুমারী মেয়ের বুকের গন্ধ না অন্যকিছু ?
নিষিদ্ধ পল্লীর কোন রমণী শরীরেই তো আমি কোনদিন
এমন মাতাল করা কাঁঠালচাপা গন্ধের আমন্ত্রণ পাইনি ?


না, ঈশ্বরের কোন দোষ নেই, দোষ থাকে না, না, না, না,
মধুরিমাদের গন্ধশুদ্ধ সস্তায়, খুব সস্তায় বিকিয়ে দিলেও না,
মূর্খ মানুষ, সব দোষ তোমার, ঈশ্বরের ভেদ তোমার অগম্য ।