মানুষরূপী অমানুষ
মোঃ সাহিদুর রহমান নয়ন


আমি নিজেকে মানুষ বলে দাবি করি
আসলে কি আমি মানুষ?


আমি যদি মানুষই হই;
তাহলে কি করে পারি; দামি পালঙ্কে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে
অথচ, কত শিশু রাত কাটাচ্ছে ওভার ব্রিজের সিড়িতে
কত পিতা সমতুল্য বৃদ্ধ ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে আছে রাস্তাতে
আমি কি পারি না?
তাদেরকে সামন্য আশ্রয় দিতে আমার মনের আঙিনাতে।


আমি যদি মানুষই হই;
তাহলে কি করে পারি; খাবার টেবিলে হরেক রকমের খাবার খেতে
অথচ, কত মানুষ ক্ষুধায় কাতর হয়ে খাবারের জন্য আছে হাত পেতে
একথালা ভাত পেলেই ভাগাভাগি করে খায় তারা কত আনন্দতে
আমি কি পারি না?
খাবারের কিছু অংশ বিলিয়ে দিয়ে ঐ কচি মুখে একটু হাসি ফুটাতে।


আমি যদি মানুষই হই;
তাহলে কি করে পারি; এই প্রচণ্ড শীতের দিনে দামি গরম কাপড় পরিতে
অথচ, বস্ত্রহীন কত অবুঝ শিশু রয়েছে, শীতও পারিনি তাদের হার মানাতে
আমি কি পারি না?
সামান্য মূল্যের কিছু গরম পোশাক তাদের মাঝে বিলিয়ে দিতে।


আমি যদি মানুষই হই;
যে সময় আমাদের ছেলে-মেয়েরা লেখা-পড়া শিখতে যাই স্কুলেতে
সে সময় কত শিশু শুধু জীবিকার তাগিদে ফুল বিক্রি করে পার্কে-গাড়িতে
সেই শিশুদের দেখে কি একটু মায়া জাগে না আমার মনের ঘরেতে
আমি কি পারি না?
একটি শিশুকেও রাস্তা থেকে তুলে শিক্ষার আলো দেখাতে।


আমি যদি মানুষই হই;
আমার মনে এত আনন্দ কিসের, সুখ কি শুধু অর্থে?
অথচ, দুঃখিনী মায়ের দুর্বল শরীর তবুও পাথর ভাঙ্গছে
একটু সহযোগীতার আশায় সে মুখ চেপে ধরে কাঁদছে
আমি কি পারি না?
ঐ চাপা কান্না মুছে ফেলে, তার মুখে চাপা হাসি ফুটাতে।


শুধু রক্ত মাংস থাকলেই যদি মানুষ হওয়া যেতো
তাহলেতো পশুরা আমার চেয়েও বড় মানুষ হতো
যদি আমার মধ্যে না থাকে মনুষ্যত্ব
আমি মানুষ নই, আমি মানুষরূপী অমানুষ।