মায়ের বুক থেকে লুকিয়েছে মুখ, তাকায় চতুর্দিকে মিটি মিটি, মৃদুসুরে  
মাঝে মাঝে পরম আদরে, তাঁর মুখে তু’লে দেই এলডোবেবী ওয়ান;
আদর আর ভালোবাসায় কেটে গেছে আরও ছয়টি মাস ফুলে ফুলে;    
এলডোবেবী ওয়ান পিছে ফেলে তার মুখে তু’লে দিই এলডোবেবী টু;
দিন আর রাত্রে ঘাসের উপর তার টলোমোলে সুখ, বেড়ে উ’ঠে সে তাঁর
মতো ক’রে আমার সকাল আর সন্ধ্যায়। বৈশাখ আর শ্রাবণ তাঁকে ক’রে
তোলে শব্দহীন স্মৃতি, যে আমারই কণ্ঠস্বরে কথা বলে সুরে সুরে, সম্পূর্ণ
একা ছিলাম আমি আমার সবুজ অরণ্যেয়। আমার সন্তান বেড়ে উ’ঠে তার
দূষিত বাতাসে, আমার নষ্টভ্রষ্ট চোখের ভিতর। দিকে দিকে তাঁকে ছেয়ে যায়
এক একটি বছর। বাড়ায় হাত তাঁর চতুর্দিকে মুঠোতে তু’লে নিবে সব কিছু;  
পরম আদরে। নিজের নয় সব কিছু, জানা নেই তার, তবুও বাড়ায় হাত চাঁদ,
জ্যোৎস্না, শিশির, কুয়াশা, কচুরি ফুল আর শিউলির বোঁটায়। কণ্ঠ আর হাত,
দিয়েছে আমাকে আপন ব’লে। আমার গৃহকোণ তার পরম আশ্রয় পঙ্কের স্নিগ্ধ,  
ঘুমে থাকে যখন, যেনো আমি এক হারানো অরণ্যের মাঝে ব’য়ে চলা ঢেউ,
আমার হৃদপিণ্ডে কেঁপে কেঁপে জমতে থাকে ফুল, মেঘ, বৃষ্টি আর ঠোঁটে পূর্ণিমার
ছোঁয়া। তার কণ্ঠ আমার অমল সুর; লাল আর নীল মেঘের দিকে দিকে গভীরে;    
সে তার মতো মুঠো ক’রে ধ’রে সব কিছু, যা তার প্রয়োজন নয় নিজের জন্য,
তারপরও তা তার দরকার, আপন মুঠোতে নিজ মনে। আমার সব কিছু আজ তাঁর,
যাতে রাখে হাত মৃদুভাবে। আমার দরকারি জিনিস ছুঁড়ে ফেলে দিক্বিদিক শক্ত হাতে।
সে কি ছুঁড়ে ফেলবে তার চারিপাশে যা দেখা যায় ? আমার সমাজ রাষ্ট্র সভ্যতার
চারিদিকে যা কিছু দেখা যায় সে কি উপড়িয়ে ফেলবে তার সব কিছু ? ক’রে নিবে
নিজের মতো দু’হাতে, পরিবর্তনশীল নতুন কোনো কাঠামো কি ধরা দিবে হাতে ?